সুমন করাতি, হুগলি: নির্দিষ্ট সময় হলেই হাজির ওরা। ভরে যায় বাড়ি। টিয়া, বুলবুলি থেকে পায়রা মনের আনন্দে ওড়ে গোটা ছাদে। পাখিদের জন্য ছাদ খুলে দিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী দেবাশিস গুহঠাকুরতা। শুধু তাই নয়, তাদের প্রতিদিন খাওয়ার ব্যবস্থাও করেন তিনি। শুধু পাখি নয় কুকুর, বেড়ালদেরও খাবার দেন তিনি।
স্বামী বিবেকানন্দের (Swami Vivekananda) বাণী জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। সেই বাণীকেই পাথেয় করেছেন চুঁচুড়ার বাসিন্দা দেবাশিসবাবু। সঙ্গ দেন স্ত্রী পুতুল গুহঠাকুরতা। ইদানীং রাস্তাঘাট থেকে বাড়িতে জীবদের উপর অত্যাচারের ঘটনা সামনে আসছে। সেই আবহে বাড়ির ছাদেই পাখিদের জন্য খাবার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করেছেন দেবাশিসবাবু। সেখানে রোজ আসে কয়েকশো টিয়া, বুলবুলি, পায়রা।
[আরও পড়ুন: সম্পর্ক মেনে নেয়নি পরিবার! মালদহে ‘আত্মঘাতী’ নাবালিকা]
পশুপাখিদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এই কাজ করছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারি। পাখিদের জন্য চাল, চালের গুঁড়ো, ছোলা ও ফলের ব্যবস্থা করেন তিনি। প্রতিমাসে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা পাখিদের খাবারের পিছনে ব্যয় করেন তিনি।
একমাত্র মেয়ের বিয়ের পর কুকুর, বিড়াল ও পশুপাখিদের নিয়েই স্ত্রী পুতুল ও তাঁর সংসার। দেবাশিসবাবু বলেন, "পাখিদের প্রতি ভালোবাসা থেকেই আমার এই কাজের চিন্তাভাবনা। প্রতি মাসে প্রায় পাঁচ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। কুকুরের খাবারের জন্য ৫০ কিলো চাল, পাখিদের জন্য ১৫ থেকে ২০ কিলো চালের গুঁড়ো লাগে। ছোলা লাগে ৮ কিলো। সারা মাসে ৯ কিলো আপেল কিনি পাখিদের জন্য। খাঁচায় পাখি পোষার চেয়ে পরিবেশে পাখির জন্য খাবারের ব্যবস্থা করলে তাদের প্রজনন বাড়বে। পরিবেশও সুন্দর হবে।"
স্ত্রী পুতুল গুহঠাকুরতা বলেন, "পাখিদের খাবার জন্য আমি স্বামীকে সহযোগিতা করি। সারাদিন এদের নিয়েই সময় কেটে যায়। পাখিদের খাবার দেওয়ার জন্য প্রতিবেশী কয়েকজনের কাছে নানান কথা শুনতে হয়। তা সত্ত্বেও যতদিন ক্ষমতা থাকবে ওদের খাইয়ে যাব।"
চুঁচুড়ার (Chinsurah) দম্পতির এই কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশ প্রেমীরা। হুগলি জেলায় পশুপাখি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন চন্দন ক্লেমেন্ট সিং। তিনি বলেন, "দেবাশিস গুহঠাকুরতা যে কাজ করছেন খুবই ভালো উদ্যোগ। বিভিন্ন সংগঠন এর সঙ্গে কাজ করলে ভালো হবে।"