অর্ণব আইচ: বাইরে থেকে দাদা এসেছে অনেকদিন পর। ভাইয়ের খুব শখ, বিরিয়ানি (Biriyani) রেঁধে খাওয়ায় দাদাকে। সেইমতো বন্ধুদের নিয়ে আয়োজনও করেছিলেন। কিন্তু রান্নার সময় দেখা যায়, বিরিয়ানির হাঁড়িটাই উধাও! বন্ধুদের নিয়ে গাড়ি চড়ে হাঁড়ি খুঁজতে বেরলেন যুবক। দীর্ঘক্ষণ পাত্তা না পেয়ে পরিবারের আশঙ্কা হল, বোধহয় ছেলেকে কেউ অপহরণ (Kidnap) করেছে। সঙ্গে সঙ্গে ১০০ নম্বরে ডায়াল করে পুলিশের সাহায্য চাইলেন যুবকের দাদা। পুলিশ ব্যতিব্যস্ত হয়ে তদন্তে নামল। কিন্তু তার কিনারা করার পর নিজেরাই হেসে খুন তদন্তকারীরা। এ যে যুবক অপহরণ নয়, বিরিয়ানির হাঁড়ি ‘অপহরণ’! এমনই মজার মামলার সাক্ষী রইল গড়ফা থানার (Garfa PS) পুলিশ।
ঘটনা শুক্রবার রাতের। গড়ফার বাসিন্দা বছর তিরিশের রোশন সিং বন্ধুদের নিয়ে পরিকল্পনা করেছিল বিরিয়ানি রান্নার। সমস্ত জোগাড়ও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কাজে নামার সময় দেখা গেল, উধাও বিরিয়ানির হাঁড়িই। তাহলে রান্না হবে কীসে? ব্যস, শশব্যস্ত হয়ে হারানো হাঁড়ি খুঁজতে বেরিয়ে পড়লেন রোশন সিং। সঙ্গে বন্ধুরা।
[আরও পড়ুন: খুন্তি নয়, গরম কড়াই থেকে লুচি তোলা হচ্ছে খালি হাতে! বিশেষ রীতি তেহট্টের এই গ্রামীণ পুজোয়]
দীর্ঘক্ষণ ভাইয়ের কোনও খোঁজ নেই দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন রোশনের দাদা এবং পরিবারের বাকিরা। তাঁরা ভাবতে শুরু করেন, কেউ কি তাঁদের ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে গেল। সেই আশঙ্কায় সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের দ্বারস্থ হয় রোশনের পরিবার। ১০০ নম্বর অর্থাৎ লালবাজারের (Lalbazar) আপৎকালীন নম্বরে যোগাযোগ করে ছেলেকে খুঁজে দিতে পুলিশের সাহায্য চান। অপহরণের অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে গড়ফা থানার পুলিশ।
[আরও পড়ুন: অনলাইনে পিৎজা-ড্রাইফ্রুট অর্ডারই কাল হল মহিলার, হারালেন ১১ লক্ষ টাকা]
প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে রোশনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে পুলিশ। ফোন রিসিভ করেন রোশন। জানতে পারে, কেউ তাঁকে অপহরণ করেনি। তিনি বন্ধুদের নিয়ে বিরিয়ানির হাঁড়ি খুঁজতে বেরিয়েছেন। একথা শুনে হাসি আর থামছিলই না দুঁদে পুলিশ অফিসারদের। তবে সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে, রোশনের বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করার পর পুলিশ তাঁকে জানায় যে বাড়ির লোকজন অত্যন্ত উদ্বিগ্ন তাঁর জন্য। তিনি যেন দ্রুত বাড়ি ফিরে যান। এসব শুনে রোশন বাড়ি ফিরে আসেন, পরিবারকে গোটা ঘটনা জানান। সকলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।
স্রেফ বিরিয়ানির খোঁজে যুবকের বেপাত্তা হওয়ার ঘটনায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের! এবং তদন্তকারীদের ব্যতিব্যস্ত করে তোলা! এমন অভিজ্ঞতা অতীতে খুব একটা নেই কলকাতা পুলিশের। রাগ করবেন কি, আসল ঘটনা জানতে পেরে হেসেই খুন তদন্তকারীরা।