সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একুশের আগে বাংলাজুড়ে সব সরকারি প্রকল্প কেমন চলছে, কোথায়ই বা ফাঁক আছে, সেসব খতিয়ে দেখতে জেলা সফর করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সোমবার বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে সেসবের খতিয়ান নিতে গিয়ে শুরুতেই ধাক্কা। বীরভূমের মতো তফসিলি জাতি-উপজাতি অধ্যুষিত জেলায় জাতিগত শংসাপত্র প্রদান নিয়ে জটিলতার কথা শুনে রেগে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কেন সমস্ত পদ্ধতি জানেন না, তা নিয়ে চূড়ান্ত ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল তাঁকে। তাঁর অজ্ঞানতার জন্য প্রচুর মানুষ সমস্যায় পড়লেন বলে তাঁকে কড়া ভাষায় বকাবকি করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের আমলে প্রশাসনিক কাজে লাল ফিতের ফাঁস আলগা হয়েছে অনেক। সহজে সরকারি পরিষেবা জনতার পৌঁছে দেওয়াই তার লক্ষ্য। ফলে সরলীকরণ হয়েছে একাধিক পদ্ধতিতেও। জাতিগত শংসাপত্র (Cast Certificate) প্রদান-সহ একাধিক পরিষেবা পদ্ধতি সহজ হয়েছে আরও। সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে জানিয়েছিলেন, এবার থেকে পরিবারের যে কোনও একজনের এই শংসাপত্র থাকলে, তাকে নথি হিসেবে ধরে অন্য সদস্যদেরও কাস্ট সার্টিফিকেট দিতে হবে। বংশ পরম্পরায় জাতিগত শংসাপত্রের নথি দেখার কোনও প্রয়োজন নেই। তাহলে সহজে যেমন শংসাপত্র প্রদানের কাজ শেষ হবে, তেনমই তা হাতে থাকলে বিশেষ সুবিধাও অনেক দ্রুত পাবেন তফসিলি জাতি, উপজাতির মানুষজন।
[আরও পড়ুন: ফের তৃণমূলের অন্দরে করোনার থাবা, এবার আক্রান্ত রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি]
কিন্তু এই সরলীকরণ পদ্ধতির কথা জানেনই না বীরভূমে এই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক! জাতিগত শংসাপত্র প্রদানের কাজ কতটা এগিয়েছে, তা জানতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ওই আধিকারিকের কথা শুনে রীতিমত অবাক। তারপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। ওই আধিকারিক তাঁকে জানান যে সকলের জাতিগত শংসাপত্রের নথি দেখে সার্টিফিকেট ইস্যু করতে সময় লাগছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেল, আবেদন জমা পড়েছে ২৮ হাজার প্রায়। অথচ সার্টিফিকেট হাতে পেয়েছেন মাত্র ৪ হাজার জন।
[আরও পড়ুন: ছোট সমস্যা মেটাতে নয়া উদ্যোগ, ‘পাড়ায় পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচি নিল রাজ্য সরকার]
এত কম কাজ হল কেন? মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করে জানতে পারেন যে সরলীকরণের কথা ওই আধিকারিক জানেনই না। এ কথা জানার পর প্রশাসনিক বৈঠকে কার্যত মেজাজ হারান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন বিষয়টি বিভিন্ন সরকারি বৈঠকে বারবার বলার পরও তিনি জানেন না? এই প্রশ্ন তুলে কড়া ভাষায় বকাবকি করতে থাকেন তাঁকে। কোনও অজুহাত দিয়েই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন না ওই আধিকারিক।