সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্ষবরণের আগেই উদ্বেগের খবর। ফ্রান্স, ব্রিটেনের মতো ভারতেও করোনার ডেল্টা (Delta) ভ্যারিয়েন্টকে ছাপিয়ে যাওয়া শুরু করেছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ। সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে এমনটাই করেছে সংবাদ সংস্থা ANI। যার অর্থ, বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস মতোই হু হু করে সংক্রমণ বাড়ছে ওমিক্রনের।
এই মুহূর্তে আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলিতে ডেল্টা ছাপিয়ে করোনার সবচেয়ে বেশি সংক্রামক স্ট্রেন হিসাবে উঠে এসেছে ওমিক্রন (Omicron)। যার প্রভাবে এই দেশগুলিতে সংক্রমণের গতি আগের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। ফ্রান্স, আমেরিকা বা ব্রিটেনে এই মুহূর্তে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষাধিক। যা করোনার (Coronavirus) দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় অনেক বেশি। সত্যিই যদি ভারতেও ওমিক্রন ডেল্টাকে ছাপিয়ে গিয়ে থাকে তাহলে যে আগামী দিনে ভারতেও দ্বিতীয় ধাক্কার তুলনায় সংক্রমণ বাড়তে পারে, এমনটাই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
[আরও পড়ুন: Omicron: দেশে ওমিক্রনের দ্বিতীয় বলি রাজস্থানের বৃদ্ধ, করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও নয়া স্ট্রেনে মৃত্যু]
গবেষণায় ইতিমধ্যেই প্রমাণিত কোভিডের সবচেয়ে ভয়ংকর ভ্যারিয়ান্ট ডেল্টার (Delta) তুলনায় ওমিক্রন প্রায় ৩ গুণ সংক্রামক। সুতরাং প্রাকৃতিক নিয়মেই ডেল্টাকে কোণঠাসা করে ফেলেছে করোনার এই নয়া অবতার। ফুরিন ক্লিভেজের দু’টি ও স্পাইক প্রোটিনের ৩২টি-সহ মোট ৫২টি জায়গায় মিউটেশন হয়েছে ওমিক্রনের। এই ভোলবদলের ফলেই ওমিক্রন আগের তুলনায় বেশি সংক্রামক হয়ে উঠেছে। যার প্রভাব ইতিমধ্যেই সরাসরি দেখা যাচ্ছে রাজধানী দিল্লি, মুম্বই-সহ বেশ কিছু শহরে। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের পর দেখা যাচ্ছে রাজধানী দিল্লির ৫০ শতাংশ করোনা আক্রান্তই ওমিক্রন পজিটিভ। এদের মধ্যে অনেকেরই বিদেশ যাত্রার রেকর্ড নেই। বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই দিল্লিতে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন। মুম্বইয়েও পরিস্থিতি একই। ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ে কঠোরভাবে বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের বাণিজ্যনগরীতে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। অনেক রাজ্যেই বাড়ানো হয়েছে বিধিনিষেধ। কিন্তু এসব করে সংক্রমণ রোখা যাবে কি? সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তবে স্বস্তির খবর, আগের থেকে বেশি সংক্রামক হলেও রোগীকে কাবু করার ক্ষমতা হারিয়েছে ওমিক্রন। অর্থাৎ, আগামী দিনে সংক্রমণ বাড়লেও মৃত্যু হার কিছুটা কমতে পারে ভারতে।
[আরও পড়ুন: COVID-19 Update: বর্ষশেষে ওমিক্রনের থাবা আরও চওড়া দেশে, করোনার নয়া স্ট্রেনে আক্রান্ত প্রায় ১৩০০]
এদিন সরকারিভাবেও ভারতে করোনার সংখ্যাবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ রাজ্যগুলিকে লেখা এক চিঠিতে জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এবং পজিটিভিটি রেটে বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাই দ্রুত উপসর্গযুক্তদের শনাক্তকরণ, এবং করোনা পরীক্ষার হার বাড়ানো হোক। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যগুলিকে Rapid Antigen test-এ বাড়িতে নজর দিতে বলেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। চিঠিতে স্বাস্থ্য সচিব লিখছেন,”আরটি-পিসিআর টেস্টের রিপোর্ট আসতে অনেক সময় ৫-৮ ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। এই ঝঞ্ঝাট এড়াতে RAT টেস্টের দিকে জোর দেওয়া হোক।” সেলফ টেস্ট এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষাতেও জোর দিতে বলছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।