অর্ণব আইচ: পাসপোর্ট জালিয়াতি কাণ্ডে গ্রেপ্তার আরও এক। মঙ্গলবার রাতে বেহালার পর্ণশ্রী এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রচুর জাল নথি, নথি তৈরিতে ব্যবহৃত কম্পিউটার, প্রিন্টার ও অন্য সামগ্রী। বাংলাদেশে অশান্তির আবহে পাসপোর্ট জালিয়াতিতে এটা পঞ্চম গ্রেপ্তারি।
ধৃতের নাম দীপঙ্কর দাস। তাঁর কাছ থেকে প্রচুর জাল নথি উদ্ধার হয়েছে। নথি তৈরিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এছাড়াও এসবিআই ও ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের সিল, ৩৬টি ভারতীয় পাসপোর্টের ফটোকপি এবং ব্রিটেনের ভিসাও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এদিন ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হরিদেবপুর এলাকায় একটি বাড়ির হদিশ মেলে যেখানে জাল নথি তৈরির কাজ চলত। সেখানও হানা দেয় বাহিনী। উদ্ধার হয় প্রচুর নথি।
জানা গিয়েছে, টাকা বিনিময়ে জাল পাসপোর্ট তৈরি চক্রের মূল মাথা সমরেশ বিশ্বাসের তুরুপের তাস ছিলেন এই দীপঙ্কর। জাল নথি তৈরির দিকটা পুরোটাই দেখভাল করত সে। পেশায় ডাকঘরের অস্থায়ী কর্মী দীপঙ্কর উচ্চশিক্ষিত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে। জাল নথি তৈরির পাশাপাশি ডাকঘর থেকে জাল পাসপোর্টগুলি সংগ্রহও করত সে। তাকে জেরা করে চক্রের বাকিদের খোঁজ পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
গোয়েন্দাদের কাছে খবর, উত্তর ২৪ পরগনার পাসপোর্ট সেবাকেন্দ্রের অস্থায়ী কর্মী তারকনাথ সেনের হাত ধরে তৈরি হয়েছে দু’শোরও বেশি জাল পাসপোর্ট। তবে আপাতত ৭৩টি জাল পাসপোর্ট সম্পর্কে তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, চক্রের মূল মাথা সমরেশ বিশ্বাস ও তাঁর ছেলে রিপন বিশ্বাসের সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও নদিয়ার জাল পাসপোর্ট চক্রের সরাসরি যোগাযোগ ছিল। চক্রের এজেন্ট ও সাব এজেন্টরা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। সমরেশ ও রিপনের নজরে ছিল এই জেলাগুলির পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র ও ডাকঘরগুলি। এই কেন্দ্র ও ডাক বিভাগের কয়েকজন অস্থায়ী কর্মীকেই সমরেশরা নিজেদের চক্রে ভিড়িয়ে নেয়। তাদের মধ্যে অন্যতম এই দীপঙ্কর দাস।