দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টে ইন্ধন জোগানোর মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে গ্রেপ্তার এক মহিলা। এই মহিলার শেয়ার করা ছবি এবং ভিডিওর জেরে তেলেনিপাড়ার অশান্তি আরও বিশালাকার নেয় বলেই দাবি পুলিশের। শুক্রবার সোনারপুর থানা এলাকা থেকে সুতপা মাইতি নামে ওই মহিলাকে গ্রেপ্তার করেন চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকরা। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে বলেই জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মাইতি সুতপা নামে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে ওই মহিলার। সেখানে সে নিজেকে একজন আইনজীবী বলে পরিচয় দিয়েছে। গত ১৩ মে থেকে তার টাইমলাইনে একাধিক পোস্ট করা হয়। যে পোস্টগুলি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের ক্ষেত্রে যথেষ্ট বলে মনে করছে পুলিশ। তাই তাকে শুক্রবার সোনারপুর থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার শেয়ার করা ছবি, ভিডিও আর কারা শেয়ার করেছে, তা খতিয়ে জেখছে পুলিশ। ওই মহিলা আদতে আইনজীবী কি না, তাও তদন্তসাপেক্ষ। আলাদা করে তার কোনও রাজনৈতিক পরিচিত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেই জানিয়েছে পুলিশ। ডিসিপি হেড কোয়ার্টার সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এই মহিলার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে সোনারপুর থানাতেও একটি মামলা রয়েছে। সেটি কীসের মামলা ছিল, তা খতিয়ে দেখা হবে। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করবে পুলিশ।” এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৬ জন মহিলা-সহ মোট ১২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: লকডাউনে শিকেয় পড়াশোনা, পড়ুয়াদের স্বার্থে অনলাইন কোচিং ক্লাস পুলিশের]
উল্লেখ্য, রবিবার সন্ধ্যায় ভদ্রেশ্বরের তেলিনিপাড়ায় দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে তুমল গন্ডগোল হয়। বিভিন্ন বাড়ি লক্ষ্য করে ইট ও পাথর ছোঁড়া পাশাপাশি বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুরের পাশাপাশি সোনার দোকানে লুটপাট চলে বলেও অভিযোগ ঘটে। এরপর সোমবার সকাল থেকেই বিষয়টি নিয়ে শুরু বিজেপি ও তৃণমূলের তরজা। বিজেপির পক্ষ থেকে স্থানীয় এক তৃণমূল কাউন্সিলরের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি দেখতে চাইলে স্থানীয় বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে বাধা দেয় পুলিশ। এর জেরে নতুন করে উত্তেজনাও ছড়ায়। মঙ্গলবার সকাল থেকে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দফায় দফায় বোমাবাজি, ভাঙচুর হচ্ছে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে। এই মর্মে বঙ্গ বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল রাজ্যপালের কাছে সরকার ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে।
এই ঘটনার জেরে আপাতত হুগলি ১১টি থানা এলাকায় বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। তা সত্ত্বেও স্থানীয়দের অভিযোগ, এদিন তেলিনিপাড়ায় ত্রাণ বিলি করেন বিজেপির একদল কর্মী সমর্থক। তাতে অংশ নেন বিজেপি হুগলি জেলা সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি সুবীর নাগও। জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “বিজেপি মানুষে মানুষে বিভাজন করার চেষ্টা করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতদিন আছে, ততদিন বিজেপি এসব করতে পারবে না।”
[আরও পড়ুন: লকডাউন ভেঙে এক নৌকায় ৭৫ জন যাত্রী! খবর পেয়েই নামিয়ে দিল কাটোয়া পুলিশ]
The post সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টে ফেসবুক পোস্ট, তেলিনিপাড়া কাণ্ডে গ্রেপ্তার আরও ১ মহিলা appeared first on Sangbad Pratidin.