অভিরূপ দাস: যেখানেও থাকো মিটিংয়ে যোগ দাও! ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ বিপদ ডেকেছে সেলসম্যানদের! ওয়েস্ট বেঙ্গল সেলস রিপ্রেজেন্টিটিভস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ রায় জানিয়েছেন, দিনভর বাইকে করে ঘুরতে হয় সেলসম্যানদের। ভিড় রাস্তায় চলমান বাইকে তার মধ্যেই সংস্থার ‘অনলাইন মিটিং’ এর আবদার মেটাতে গিয়ে মৃত্যু হচ্ছে একের পর এক সেলসম্যানের।
সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা গিয়েছে স্কুটার চালাতে চালাতে অফিসের ভিডিও-কলে কথা বলতে হচ্ছে এক কর্মীকে। ‘অল ওয়েস্ট বেঙ্গল সেলস রিপ্রেজেন্টটিভস ইউনিয়ন’-এর অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার সেলসম্যানদের ‘ওয়ার্কিং-রুলস’ ঠিক করছে না। তার জন্যেই হচ্ছে সমস্যা। এই নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন বিশ্ব বন্দিত অর্থনীতিবীদ জঁ দ্রেজও। সম্প্রতি ‘অল ওয়েস্ট বেঙ্গল সেলস রিপ্রেজেন্টটিভস ইউনিয়ন’-এর সুবর্ণ জয়ন্তী প্রতিষ্ঠা বর্ষে ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউট হলে আয়োজন করা হয়েছিল এক অনুষ্ঠানের।
[আরও পড়ুন: প্রদেশ সভাপতি থেকে সংগঠন, বঙ্গে কোন পথে চলবে কংগ্রেস? দিল্লিতে বৈঠকে বসছে হাইকমান্ড]
সেখানে হাজির ছিলেন বিশ্ববন্দিত অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ। দিল্লি স্কুল অফ ইকনমিক্সের সম্মানীয় অধ্যাপক জঁ দ্রেজ অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সরকারের দিশাহীন শ্রম আইনের সমালোচনা করেছেন। পাশাপাশি প্রশংসা করেছেন, বাংলার লক্ষ্মীর ভান্ডারের। সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর বিরোধীরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে রে রে করে উঠেছিল। বাংলার মানুষকে, আক্রমণ করে তাদের বক্তব্য ছিল, ‘ভাতার জয় হয়েছে বাংলায়।’ এমন বক্তব্যকে নস্যাৎ করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ‘অ্যান আনসার্টন গ্লোরি ইন্ডিয়া ইটস কন্ট্রাডিকশনস’ বইয়ের সহ লেখক জঁ দ্রেজ জানিয়েছেন, নারীদের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা দেওয়ার প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার অত্যন্ত সফল। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য যেন অন্যান্য বাংলার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলি উপেক্ষিত না হয়। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চলতে থাকুক। কীভাবে তাকে বহাল রাখা যায় তার জন্য স্থায়ী সমাধান করতে হবে এই সরকারকে।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পেরও খোলামেলা প্রশংসাও শোনা গিয়েছে জঁ দ্রেজের মুখে। তবে অর্থনীতিবিদের বক্তব্য, লক্ষ্য রাখতে হবে এই স্বাস্থ্যসাথীর টাকা যেন বেসরকারি মুনাফা লোভী হাসপাতালদের কাছে না যায়। বেসরকারী অ-লাভজনক যে হাসপাতালগুলি আছে তাদের কাছে বেশি বেশি করে সাহায্য পৌঁছে দিতে হবে। তবেই প্রান্তিক এলাকার মানুষদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রকৃষ্ট উন্নয়ন হবে।