রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: এগরার নার্সিংহোম মালিকের সহযোগিতার শিশুপুত্র বিক্রির অভিযোগ। দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালের তৎপরতায় চক্রের হদিশ পেল দিঘা কোস্টাল থানার পুলিশ। নার্সিংহোমের মালিক দম্পতি ও ক্রেতাকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। প্রায় দু’লক্ষ টাকার বিনিময়ে ওই শিশুকে বিক্রি করা হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
শিশু কেনার অভিযোগে দিঘা হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল রামনগর থানার দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা মর্জিনা বিবিকে। তাঁকে জেরা করতেই প্রকাশ্যে আসে গোটা ঘটনা। বিষয়টা ঠিক কি? পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার দিঘা হাসপাতালের বহির্বিভাগে টিকাকরণের জন্য শিশুপুত্রকে নিয়ে যায় মর্জিনা-সহ তিনজন মহিলা। টিকাকরণের আগে শিশুটির জন্মের শংসাপত্র-সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কেউ তা দেখাতে পারেননি। কথাবার্তায় ছিল নানা অসঙ্গতি। ফলে সন্দেহ হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। বিষয়টি পুলিশের নজরে আনা হয়। এরপরই শিশুটিকে জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানায় এবিষয়ে অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ তদন্তে নেমে তিন মহিলাকে আটক করে। পরবর্তীকালে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ না মেলায় দুই মহিলাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ‘মা’ মর্জিনাকে আটক করে জেরা করা হয়। সে শিশুটিকে কিনেছে বলে জানতে পারে পুলিশ। মর্জিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই নার্সিংহোম মালিক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: দুষ্টু গরুর থেকে শূন্য গোয়াল ভাল! ফেসবুক পোস্টে বীরভূমের বিজেপি কর্মীদের কড়া বার্তা অনুপমের]
দম্পতিকে জেরা করে গিয়াসুদ্দিন নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, ওই নার্সিংহোমের মাধ্যমে গিয়াসুদ্দিন নিঃসন্তান মর্জিনাকে শিশুটি বিক্রি করেছিল। এক্ষেত্রে দু’লক্ষ টাকায় রফা হয়। তার একটি অংশ পান ওই দম্পতি। এখন শিশুটি কোথা থেকে এল, তার বাবা-মা কে, গিয়াসুদ্দিনের সঙ্গে শিশুটির কী সম্পর্ক, সবকিছুরই খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিশ। শিশু চুরির ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কি না, তাও জানার চেষ্টা চলছে বলে জানান দিঘা কোস্টাল থানার ওসি মৌসুমী সর্দার। ডিএসপি(ডিঅ্যান্ডটি) রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, “গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা ধৃতদের জেরা করে ঘটনা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। তদন্তে সবদিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”