স্টাফ রিপোর্টার: সীমান্তে অবৈধ কারবারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের স্বাক্ষর করা লেটার হেডে ‘পারমিট’ দেওয়া নিয়ে কেন তদন্ত হবে না? কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না শান্তনু এবং এই চক্রে যুক্ত বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে? এমনই দাবি ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। পাচার বা চোরাচালানে মদত দেওয়ার মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছিল কেন্দ্রীয় জাহাজ রাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় অবৈধ কারবারে কীভাবে ব্যবহৃত হতে পারে এই পারমিট তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নড়েচড়ে বসার পরও হঠাৎ করে তারা কেন নীরব হয়ে গেল? তদন্ত করতে কোনও রিপোর্ট কি এ রাজ্যের বিএসএফ কর্তাদের কাছ থেকে আদৌ চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে, তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দাবি উঠেছে, এই অবৈধ পাচারে যুক্ত বিএসএফ অফিসারদের বিরুদ্ধেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
বনগাঁর সাংসদ শান্তনু দ্বিতীয়বার মোদির মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ ওঠায় জোর অস্বস্তিতে পড়েই কি তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি। এমনই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। শান্তনু নিজের লেটার হেডে জনৈক জিয়ারুল গাজিকে বিনা বাধায় গো—মাংস কারবার চালানোর সুপারিশ করেছিলেন। জিয়ারুল যাতে অবাধে ব্যবসা চালাতে পারে সেজন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিএসএফ কর্তাদের লিখিত আবেদনও করেছিলেন। গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে শান্তনুর এই চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই শুরু হয়ে গিয়েছিল বিভিন্ন মহলে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়ায় তৃণমূলও। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র নিজের এক্স হ্যান্ডলে শান্তনু ঠাকুরের সই করা সেই পারমিটের ছবি পোস্ট করে অমিত শাহর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে নিশানা করেছিলেন। কৃষ্ণনগরের সাংসদের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজের সরকারি লেটার হেডে পাচারকারীদের জন্য পাস ইস্যু করছেন।
[আরও পড়ুন: ওয়ানড় কাণ্ডে তুঙ্গে রাজনীতি, ‘দায় ঠেলার চেষ্টা করবেন না’, শাহকে পালটা বিজয়নের]
এই বিতর্ক চরমে ওঠার পরই সাংবাদিক বৈঠক করে জিয়ারুলকে পারমিট ইস্যুর বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছিলেন শান্তনু ঠাকুর। তাঁর দাবি ছিল, বিএসএফের কিছু অফিসার বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করছে। এই ধরনের পারমিট তৃণমূল পঞ্চায়েত স্তরের নেতারাও নাকি ইস্যু করেন। শাসকদলের অভিযোগ ছিল, নিজের পদ ব্যবহার করে শান্তনু ঠাকুর পাচারের মতো কাজকে মদত দিচ্ছেন। আর সেটা সামনে চলে আসায় বিষয়টি অন্যদিকে ঘোরাতে চাইছেন। জিয়ারুলও পরে দাবি করেছিল, বাড়িতে গোমাংস নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁকে পারমিট দিয়েছিলেন সাংসদ। পারমিট হাতে পেতে নাকি তাঁকে টাকাও দিতে হয়েছে। স্বরূপনগর এলাকায় শান্তনু ঠাকুরের নির্বাচনী এজেন্ট এভাবে টাকা তোলেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন জিয়ারুল। কিন্তু এত বড় বিষয় সামনে আসার পরও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কেন তদন্ত হবে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।