সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মঙ্গলবার কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, করোনার (Coronavirus) দ্বিতীয় ঢেউয়ে (Second Wave) অক্সিজেনের (Oxygen) অভাবে কোনও মৃত্যুর খবর তাদের কাছে নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এহেন মন্তব্যকে ঘিরে শুরু হয়েছে সমালোচনা। দিল্লির (Delhi) স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে শিব সেনা (Shiv Sena) সাংসদ সঞ্জয় রাউত, বিরোধীরা তোপ দাগতে শুরু করেছেন কেন্দ্রকে।
গতকাল, মঙ্গলবার রাজ্যসভায় একটি লিখিত প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রের তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, স্বাস্থ্য একান্তই রাজ্যের বিষয়। এবং নিয়মিত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে কোভিডের (COVID-19) দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হিসেব দেওয়া উচিত রাজ্যগুলির। তবে সেই সঙ্গেই দাবি করা হয়, ‘‘যদিও অক্সিজেনের অভাবে কোনও মৃত্যুর কথাই রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি জানায়নি।’’
[আরও পড়ুন: ২০২৪ পর্যন্ত Congress সভানেত্রী সোনিয়াই? বড় পদ পেতে পারেন পাইলট-আজাদ]
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এমন মন্তব্যের জবাবে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘ওরা হয়তো এটাও বলতে পারে আদৌ অতিমারী বলেই কিছু নেই। যদি অক্সিজেনের অভাবে কোনও মৃত্যু নাই হয়ে থাকে তাহলে হাসপাতালগুলি কেন দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। প্রতিদিন তারা বেপরোয়া হয়ে আরজি জানাচ্ছি।’’ প্রসঙ্গত, দেশের বহু রাজ্যেই অক্সিজেনের ঘাটতি ও কালোবাজারির অবিযোগ জানিয়ে বহু রোগীর পরিবারও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল।
সেই সময় দিল্লিতে একটি অডিট কমিটি তৈরি হয়েছিল বলেও জানান সত্যেন্দ্র। তিনি দাবি করেন, সেই কমিটির কাছে যা তথ্য রয়েছে তা অনায়াসেই দেওয়া যায়। কিন্তু লেফটেন্যান্ট গভর্নর জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনও তথ্যের প্রয়োজন নেই। কেন্দ্র নিজেদের মতো প্যানেল তৈরি করে নিয়েছে।
[আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কের মাঝেই এবার দেশে হানা Bird flu’র, প্রাণ হারাল ১১ বছরের বালক]
বুধবারই শিব সেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রের ‘অক্সিজেন’ মন্তব্যে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বাকরুদ্ধ। যে সব পরিবারের সদস্যরা অক্সিজেনের অভাবে হওয়া মৃত্যুতে তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, এমন কথা শুনে তাঁদের কেমন লাগবে? এই সব পরিবারগুলির উচিত সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করা।’’ সঞ্জয়কে অবশ্য পালটা দিয়েছে গেরুয়া শিবির। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজেপি নেত্রী মীনাক্ষ্মী লেখি তাঁকে ‘দু’মুখো’ বলে উল্লেখ করে জানান, ‘‘মহারাষ্ট্রে কতজন অক্সিজেনের অভাবে মারা গিয়েছেন, সেই তথ্য শিব সেনা আগে কেন্দ্র ও সংবাদমাধ্যমকে জানাক। একই কথা প্রযোজ্য দিল্লির ক্ষেত্রেও।’’
কেবল রাজনীতিবিদরাই নয়, মুখ খুলেছেন ভুক্তভোগীরাও। দিল্লির তরুণ গৌরব গেরা, যিনি বাবা-মা দু’জনকেই হারিয়েছেন তিনি জানিয়েছেন, ‘‘সংসদে সরকারের এমন বিবৃতি শুনে খুব দুঃখ পেয়েছি। আমার বাবা সুস্থই ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে আমি হারাই। ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, অক্সিজেনের ঘাটতিই কারণ। আমি আমার অভিভাবকদের হারিয়ে ফেললাম। কিন্তু এটা নিয়ে এখনও রাজনীতি হয়ে চলেছে।’’