সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গতকাল বাতিল হয়েছে পুণের (Pune) নাবালক চালকের জামিন। এর মধ্যেই আদালতে পুলিশের আবেদন, কম বয়সের অজুহাতে শাস্তি যাতে লঘু না হয়, সেকথা মাথায় রেখে ১৭ বছর ৮ মাস বয়সি কিশোরকে 'সাবালক' হিসেবে দেখা হোক। উল্লেখ্য, গত রবিবার রাতে অভিযুক্তের দু' কোটি টাকা দামের বিলাসবহুল গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় ২১ ও ২৪ বছর বয়সি দুই আইটি কর্মীর।
রবিবার ভোররাতে ভয়ংকর দুর্ঘটনাটি ঘটে পুণের (Pune) কোরেগাও পার্কে। কিশোরের বিলাসবহুল গাড়ি ২০০ কিমি গতিতে ছুটছিল। সেটি ধাক্কা মারে উলটো দিক থেকে আসা একটি মোটরবাইকে। মৃত্যু হয় দুই বাইক আরোহী আইটি কর্মীর। দুর্ঘটনার পরেই আটক করা হয়েছিল নাবালক গাড়িচালককে। যদিও মাত্র ১৪ ঘণ্টার মধ্যে একাধিক বেনজির শর্তে ১৭ বছরের কিশোরকে জামিন দেয় জুভেনাইল আদালত। স্রেফ রচনা লিখে জামিন পেয়ে গিয়েছিল সে। তীব্র বিতর্কের মধ্যে সেই জামিন বাতিল হয়েছে বুধবার সন্ধ্যায়।
[আরও পড়ুন: ইন্ডিয়া জোট জিতলে প্রধানমন্ত্রী কে? উদ্ধবের উলটো কথা কেজরিওয়ালের মুখে]
গতকাল জুভেনাইল আদালত নির্দেশ দিয়েছে, তদন্ত চলাকালীন আগামী ১৫ দিন অর্থাৎ ৫ জুন অবধি নাবালকদের সংশোধনাগারে থাকবে অভিযুক্ত। জামিন বাতিলের আবেদনের পাশাপাশি অভিযুক্তকে 'সাবালক' হিসেবে দেখা হোক, এই মর্মেও আবেদন করেছে পুণে পুলিশ। পুণের পুলিশ কমিশনার অমিতেশ কুমার বলেন, "জুভেনাইল আদালতের বিচারকদের কাছে একটি রিভিউ আবেদন দাখিল করা হয়েছে পুলিশের তরফে, যাতে করে কিশোরটিকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসাবে বিচার করার অনুমতি দেওয়া হয়।" যদিও এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে আদালত কিছু জানায়নি।
পোর্শে দুর্ঘটনায় দুই মৃতের অন্যতম ২৪ বছরের আনিস অবধিয়া। বুধবার সাংবাদিক প্রশ্নের মুখে কান্নায় ভেঙে পড়েন আনিসের মা সবিতা অবধিয়া। নাবালক চালকের বিরুদ্ধে 'খুনে'র অভিযোগ করেন তিনি। চোখের জল ভাসতে ভাসতে বলেন, "ও আমার সন্তানের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। আমার থেকে চিরকালের মতো দূরে চলে গেল সন্তান। আর কোনও দিন দেখা হবে না!" তাঁর মতে "ছেলেটার (পোর্শের নাবালক চালকের) ভুল তো ছিলই। এই ঘটনাকে খুনও বলা চলে।" কারণ ওই ভুল না হলে দু'জন মানুষের প্রাণ বেঁচে যেত।
[আরও পড়ুন: রচনা লিখে মুক্তি, প্রতিবাদের জেরে পুণের বিলাসবহুল গাড়ির নাবালক চালকের জামিন বাতিল]
তদন্তে কেচো খুড়তে গিয়ে একের পর এক কেউটে বেরোচ্ছে। জানা গিয়েছে, পোর্শে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশনই ছিল না, বিতর্ক বাড়তেই গ্রেপ্তারির এড়াতে গোয়া পালিয়ে ছক কষেছিলেন নাবালকের বাবা ইমারত ব্যবসায়ী বিশাল আগরওয়াল, এমনকী তাঁর সঙ্গে মুম্বই আন্ডারওয়ার্ল্ডের যোগ রয়েছে বলেও অভিযোগ। সব মিলিয়ে একটি সাধারণ দুর্ঘটনা বৃহত্তর অপরাধকে সামনে আনছে।