সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, করোনা মহামারীতে মৃত্যু মিছিল থামাতে দেশের অন্য অনেক রাজ্যেই কড়াকড়ি লকডাউনের পথেই হাঁটতে চলেছে।
পশ্চিমবঙ্গে তো ইতিমধ্যেই কনটেনমেন্ট জোনগুলিতে ৯ জুলাই থেকে সাতদিন পুরোপুরি লকডাউনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই ফর্মুলা মেনেই এবার মহারাষ্ট্র সরকার আগামী সোমবার অর্থাৎ ১৩ জুলাই থেকে পুণে, পিম্পিরি-চিঞ্চওয়াড়েতেও ১১ দিন সম্পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, কেরলের তিরুবনন্তপুরমেও আগামী এক সপ্তাহ পুরোপুরি লকডাউনের নির্দেশ জারি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। অসমের জোড়হাট ও ওড়িশার গঞ্জাম জেলাতেও লকডাউন বলবৎ হয়েছে। করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ তড়িৎ গতিতে বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাকি অংশেও লকডাউন বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই দেশের আরও রাজ্য লকডাউন বৃদ্ধির ঘোষণা করবে।
[আরও পড়ুন: বিকাশ দুবে এনকাউন্টার: গরুর পালকে পাশ কাটাতে গিয়ে উলটে যায় গাড়ি, STF’এর দাবিতে বিতর্ক]
তা আনলক পর্ব শুরু হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কেন এই কড়া লকডাউন? বিভিন্ন সমীক্ষায় এবং বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, জুলাইয়ের শেষে করোনা সংক্রমণের হার একেবারে শীর্ষে পৌঁছবে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হবে যে দেশে রোগী চিকিৎসার জন্য সিসিইউ বেড কিংবা ভেন্টিলেটর মিলবে না। একটি সর্বভারতীয় সমীক্ষা এমনই সংকটের আভাস দিয়েছিল।প্রত্যেকদিনই দেশে সংক্রমণের হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে মৃত্যুর সংখ্যা। বর্তমানে বিশ্বে করোনা সংক্রমণের সংখ্যার নিরিখে তিন নম্বরে রয়েছে ভারত। বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, এই গতিতে যদি চলতে থাকে তাহলে খুব তাড়াতাড়ি তালিকায় আরও উপরের দিকে চলে যাবে ভারত। এই অবস্থা যাতে ভবিষ্যতে না হয়, তারই প্রস্তুতি হিসাবে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত। বিশেষ করে যেখানে সংক্রমণের হার খুব বেশি, সেখানে একমাত্র জরুরি পরিষেবা ছাড়া পুরোপুরি লকডাউন বলবৎ হয়েছে। শুধু তাই নয়, লকডাউন না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও প্রত্যেকটি প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
একটা জিনিস দেখা যাচ্ছে, স্থানীয়ভাবেই সংক্রমণের হার বেশি। সেই কারণে, রাজ্যগুলি যেখানে সংক্রমণের হার বেশি ঠিক সেখানেই ‘কড়া’ লকডাউনের পথে হাঁটছে। আনলক পর্বে ‘মিশন নিউ বিগিন’ শুরু করেছিল মহারাষ্ট্র সরকার। সামাজিক বিধি মেনে মোটামুটি সবেতেই ছাড় দিয়েছিল করোনা সংক্রমণে দেশের শীর্ষে থাকা ওই রাজ্যটি। কিন্তু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে মহারাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর পুনেতে ১১ দিন পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করল উদ্ধব ঠাকরে সরকার। শুক্রবার মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, সোমবার, ১৩ থেকে ২৩ জুলাই লকডাউন চলবে পুণেতে। তাছাড়াও পিম্পিরি-চিঞ্চওয়াড়েও পুরো লকডাউন চলবে ১১ দিন। অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দোকান ও জরুরি পরিষেবার অফিস ছাড়া বাকি সব কিছু বন্ধ থাকবে। শিল্পতালুক পিম্পিরি-চিঞ্চওয়াড়ে সমস্ত কলকারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। শহরাঞ্চলের তুলনায় পুণের গ্রামীণ এলাকায় সংক্রমণ কিছুটা কম। তবে গ্রামীণ এলাকাকেও লকডাউনের আওতায় রাখা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, গ্রেপ্তার যুবক]
এদিকে, কেরলের তিরুবনন্তপুরমে নতুন করে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার জেরে লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। দেখা গিয়েছে যে, ১২৯ জনের মধ্যে ১০৫ জনই করোনা পজিটিভ। প্রশাসন সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে যে, স্থানীয়ভাবেই এই সংক্রমণ ঘটছে। সেই জন্যই পুরোপুরি লকডাউনের সিদ্ধান্ত। একই অবস্থা অসমের জোড়াহাট ও ওড়িশার গঞ্জামে।
The post শুধু বাংলা নয়, করোনায় মৃত্যুমিছিল রুখতে ফের কড়া লকডাউনের পথে দেশের একাধিক রাজ্য appeared first on Sangbad Pratidin.