অভিষেক চৌধুরী, কালনা: বয়স বিরাশি বছরেরও বেশি। কিন্তু কে বলবে সেটা? এই বয়সেও তাঁর মনে অদম্য জেদ। শক্তপোক্ত সুঠাম শরীরের পাশাপাশি মনের জোরে যে কোনও কম বয়সি প্রতিযোগীকে অনুপ্রেরণা জোগাতে পারেন। এমনকী তাঁর সঙ্গে সমানতালে হাঁটা বেশ দুঃসাধ্য। আর সেটাকেই সম্বল করে বিশ্বমঞ্চে ভারতের পতাকা ওড়ালেন অণিমা তালুকদার।
এক সময়ে তিনি ছিলেন কালনার এক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। তবে অবসর নিয়েছেন বহুদিন। এমনিতে অবসর নেওয়ার পর অধিকাংশ মানুষ নিরুদ্বেগ, উত্তেজনাহীন জীবন বেছে নেন। কিন্তু অণিমা তাঁদের মধ্যে পড়েন না। নাহলে কি আর ৮২ বছর বয়সে এশিয়া মাস্টার্স অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করতেন? শুধু অংশগ্রহণ নয়, সেখানে সোনাও জেতেন তিনি।
চেন্নাইয়ে আয়োজিত ২৩তম এশিয়া মাস্টার্স অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেন অণিমা তালুকদার। তাঁর বাড়ি কালনার কৃষ্ণদেবপুর এলাকায়। শুক্রবার ৮০ বছর বয়সি বিভাগে ৫ কিমি হাঁটা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। অন্য দেশের প্রতিযোগীদের পিছনে ফেলে প্রথম স্থান অধিকার করে সোনার পদক জিতে নেন অণিমা।
শুক্রবার বিকালে তাঁর এই জয়ের আনন্দ উচ্ছ্বাস এসে পৌঁছয় কালনাতেও। অশীতিপর 'তরুণী'র সাফল্যে খুশি কালনাবাসী। এর পাশাপাশি মায়ের জয়ে ভীষণ খুশি অনিমা দেবীর দুই মেয়ে অসীমা ও অঞ্জলি তালুকদার এবং কলকাতা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ছেলে ডাঃ অরুনাংশু তালুকদার। হাঁটু ব্যথা, পায়ের ব্যথায় যেখানে আট থেকে আশি আক্রান্ত, সেখানে ৮২ বছর বয়সে জীবনের নতুন পাঠ শেখাচ্ছেন অণিমা।
