সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে সোনালি দিন ভারতের। প্রথমে ইতিহাস গড়েছিলেন জেসমিন ল্যাম্বোরিয়া। ২৪ বছর বয়সি জেসমিন ৫৭ কেজি বিভাগে সোনা জিতেছিলেন। লিভারপুলে আয়োজিত ফাইনালে তাঁর সামনে নতি স্বীকার করেন পোল্যান্ডের জুলিয়া জেরেমেতা। বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে সেটাই ছিল ভারতের প্রথম স্বর্ণপদক। এবার ভারতকে দ্বিতীয় সোনার স্বাদ দিলেন মীনাক্ষী হুডা।
এদিন শুরু থেকে জেসমিন যেভাবে আক্রমণাত্মক খেলেন, তা দেখে প্রশংসা করছেন সকলে। ম্যাচের ফলাফল ৩০-২৭, ২৯-২৮, ৩০-২৭, ২৮-২৯, ২৯-২৮। অর্থাৎ পোলান্ডের বক্সার ৪-১ ব্যবধানে হার স্বীকার করেছেন। বিশ্বজয়ের পর জেসমিন বলেন, "এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। খুব ভালো লাগছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে। প্যারিসে অলিম্পিকে হেরে গিয়েছিলাম। তারপর থেকে অনেক প্ররিশ্রম করেছি। কৌশল নিয়েও ভাবনাচিন্তা করেছি। অবশেষে পদক এল। এটা আমার এক বছরের নিরলস নিষ্ঠার প্রতিদান।"
২০০১ সালের ৩০ আগস্ট হরিয়ানায় জন্মানো জেসমিন তাঁর কাকার কাছ থেকে বক্সিংয়ে আসার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন। তাঁর দুই কাকা সন্দীপ সিং এবং পারবিন্দর সিং জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পদক জিতেছেন। তাছাড়াও তাঁর প্রপিতামহ হাওয়া সিংও একজন বক্সার ছিলেন। তিনি ১৯৬০-৭০ এর দশকে ভারতীয় হেভিওয়েট বক্সিংয়ে দাপিয়ে খেলেছিলেন। ১৯৬৬ এবং ১৯৭০-এর এশিয়ান গেমসে সোনার পদক জিতেছিলেন। অর্জুন এবং দ্রোণাচার্য পুরস্কারজয়ী হাওয়া সিং বিখ্যাত 'ভিওয়ানি বক্সিং ক্লাব'-এর অন্যতম সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। এই ক্লাবটি ভারতের সেরা কিছু বক্সারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এর মধ্যে অলিম্পিক পদকপ্রাপ্ত বিজেন্দ্র সিংও ছিলেন।
প্রথম দিকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছিল জেসমিনকে। তাঁর বাবা হোমগার্ড হিসেবে কাজ করতেন। মা গৃহবধূ। তবে, তার কাকা তাকে বক্সিংয়ে এগিয়ে যেতে অনেক সাহায্য করেছিলেন। তিনি জেসমিনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর আগেও পদক জিতেছেন জেসমিন। ২০২২ সালের কমনওয়েলথ গেমসে লাইট ওয়েট বিভাগে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন তিনি।
অন্যদিকে, ৪৮ কেজি বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মীনাক্ষী। কাজাখস্তানের নাজিম কিজাইবেকে ৪-১ ব্যবধানে হারান ২৪ বছর বয়সি ভারতীয় বক্সার। জেসমিন এবং মীনাক্ষী সোনা পেলেও ৮০+ কেজি হেভিওয়েট বিভাগের ফাইনালে পরাজিত হয়ে রুপো নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে নূপুর শেওরানকে। এই বিভাগে সোনা পেয়েছেন পোল্যান্ডের আগাতা কাজমারস্কা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কাজমারস্কার কাছে ২-৩ ব্যবধানে হেরে যান নূপুর। প্রথমবার বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছিলেন তিনি। তাছাড়াও ব্রোঞ্জ পদক জয়ী হয়েছেন পূজা রানি। ৮০ কেজি বিভাগের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের এমিলি অ্যাসকুইথের কাছে পরাস্ত হয় পূজা। খেলার ফলাফল ১-৪। শুরুটা ভালো করলেও শেষ পর্যন্ত সেটা ধরে রাখতে পারেননি।
