সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু'টি হাত নেই। কিন্তু পা দিয়েই লক্ষ্যপূরণ শীতল দেবীর (Sheetal Devi)। প্রথম প্যারা আর্চার হিসাবে ভারতের স্বাভাবিক ক্ষমতাসম্পন্নদের দলে সুযোগ পেলেন তিনি। জাতীয় ট্রায়ালে তৃতীয় স্থান অর্জনের পর ঐতিহাসিক কৃতিত্ব অর্জন করেছেন প্যারিস প্যারালিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক জয়ী এই তিরন্দাজ। দক্ষিণ কোরিয়ায় গত সেপ্টেম্বরে প্যারা আর্চারি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে একই দিনে সোনা, রুপো এবং ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। এবার ভারতীয় 'এবল-বডিড' দলে সুযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মুকুটে নতুন পালক উঠল।
জেদ্দায় আসন্ন এশিয়া কাপের স্টেজ-৩-এর জুনিয়র দলে সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এই প্রথম কোনও প্যারা-অ্যাথলিট আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতায় স্বাভাবিক ক্ষমতাসম্পন্নদের দলে সুযোগ পেলেন। ফোকোমেলিয়া নামে একটি বিরল রোগে আক্রান্ত তিনি। এর ফলে দু'টি হাত হারাতে হয়েছে তাঁকে। একটা সময়ে ক্রীড়াবিদ হওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন শীতল। সেই তিনিই প্যারালিম্পিকে ভারতের সর্বকনিষ্ঠ অ্যাথলিট হিসাবে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন।
১৪ বছর বয়স থেকে তিরন্দাজি শুরু করেন জম্মু-কাশ্মীরের কিশোরী। এর মাত্র দু'বছরের মধ্যেই একাধিক দেশে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে ফেলেন। পা দিয়ে তির ছুড়ে গড়েন একের পর এক নজির। এবার ভারতীয় 'এবল-বডিড' দলে সুযোগ পাওয়ায় নতুন ইতিহাসে শীতল। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত তিনি। উল্লেখ্য, চলতি বছরেই প্রথম মহিলা বাহুহীন প্যারা আর্চার হিসাবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজির গড়েছেন শীতল।
সোশাল মিডিয়ায় শীতল লেখেন, 'আমি যখন আর্চারি শুরু করি, তখন থেকেই ছোট্ট একটা স্বপ্ন ছিল। স্বাভাবিক ক্ষমতাসম্পন্নদের সঙ্গে খেলব। সহজে এই সাফল্য আসেনি। প্রথমে ব্যর্থ হয়েছি। কিন্তু প্রত্যেক ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আজ সেই স্বপ্ন আরও এক ধাপ এগিয়েছে।' শীতলের বয়স ১৮। কাটরার শ্রীমাতা বৈষ্ণোদেবী শ্রাইন বোর্ড স্পোর্টস কমপ্লেক্সে প্রশিক্ষণ নেন তিনি। সম্প্রতি সোনিপাতে চার দিনের ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হয়। ৬০ জন স্বাভাবিক ক্ষমতা সম্পন্ন তিরন্দাজের সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন শীতল। সেখানে নিজের জাত চেনান। ১১.৭৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে শেষ করেন।
