সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্রীজেশ আওয়ার ওয়াল, হরমনপ্রীত আওয়ার সোল।
স্পেনকে হারিয়ে ব্রোঞ্জ জেতার পরে গ্যালারিতে এমন লেখাই দেখা গেল। হরমনপ্রীত জোড়া গোল করলেন। মোক্ষম সময়ে শ্রীজেশ হয়ে উঠলেন প্রাচীর। সেই কারণেই গ্যালারিতে দেশের দুই তারকাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত সমর্থকরা। শেষ বাঁশির পরে শ্রীজেশকে দুর্দান্ত গার্ড অফ অনার দিলেন তাঁরই সতীর্থরা। এটাই যে তাঁর শেষ ম্যাচ ছিল। সরে যাওয়ার আগে রাঙিয়ে দিয়ে গেলেন তিনি।
খেলার শেষে হরমনপ্রীত চুমু ছুড়ছেন। শ্রীজেশ তাঁরই সতীর্থদের কাঁধে কাঁধে ঘুরছেন। ভিকট্রি ল্যাপ দিচ্ছেন। এমন দৃশ্য মুহূর্তের মধ্যে মনে করিয়ে দেয় ২০১১ বিশ্বকাপ ক্রিকেট চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরের দৃশ্য। শচীন তেণ্ডুলকর কোহলি-ভাজ্জিদের পিঠে চড়ে উদযাপন করছেন ওয়াংখেড়েতে। যদিও সেটা ছিল বিশ্বসেরা হওয়া। আর প্যারিসে ব্রোঞ্জ জয়। তবে জয় তো জয়ই। দেশের ছেলেদের জয় দেখার জন্যই যে অপেক্ষায় থাকেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। বৃহস্পতিবার সেরকমই এক বিকেল প্যারিসে। অধিনায়ক হরমনপ্রীত বললেন, ''এই টুর্নামেন্ট শ্রীজেশকেই আমরা উৎসর্গ করব।'' ১৯৭২ সালের পরে প্রথমবার পরপর দুবার পদক জিতল ভারতের হকি দল।
[আরও পড়ুন: এখনই শেষ নয়! ভিনেশকে অবসরের সিদ্ধান্ত বদলানোর অনুরোধ মহাবীর ফোগাটের]
দীর্ঘদিন ধরে ভারতের গোল আগলাচ্ছেন শ্রীজেশ। তাঁর জন্যই জিততে চেয়েছিলেন হরমনপ্রীতরা। ৮ ম্যাচে ১০ গোল করা হরমনপ্রীত বলছেন, ''আমরা হকিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আপনারা সবাই পাশে থাকুন। আশা রাখছি পরের বার ফের পদক নিয়ে ফিরব।''
খেলার শেষে সবাই ছুটে এলেন শ্রীজেশের দিকে। সেই শ্রীজেশকেই দেখা গেল গোলের উপরে বসে রয়েছেন। তিনি গর্ব করতে পারেন। তাঁর কাছেই রয়েছে টোকিও ও প্যারিসের ব্রোঞ্জ পদক। কিন্তু সোনা হারানোর জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন। হরমনপ্রীতকে বলতে শোনা গিয়েছে, “সোনা জয়ের লক্ষ্যেই খেলতে এসেছিলাম। জার্মানির কাছে আমরা হেরে গেলাম। দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তবে আমরা আরও এক বার ব্রোঞ্জ জিতে ফিরছি।”
গতকাল হৃদয় ভাঙার কাহিনি লেখা হয়েছিল প্যারিসে। সেই ধাক্কা সামলে প্যারিসে তেরঙ্গা উড়ল। এই ব্রোঞ্জ কেবল শ্রীজেশকে উৎসর্গ করা নয়, এই ব্রোঞ্জ তো ভিনেশ ফোগাটকেও উৎসর্গ করা। জার্মানির কাছে হেরে গিয়ে সোনার দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছিল ভারত। শামশের, হরমনপ্রীতরা সেদিন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে শামশেরের দুরন্ত শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ভারতও হার মানে। এদিন নব উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ভারতের ছেলেরা। স্পেন প্রথমে গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এই ভারত তো অদম্য। শেষ বাঁশি পর্যন্ত লড়ে যায়। অধিনায়ক হরমনপ্রীত সমতা ফেরান। আবার তিনিই মোক্ষম সময়ে গোল করে এগিয়ে দেন ভারতকে। বাকি সময়টা ভারত লড়ে গেল মরিয়া হয়ে। ব্রোঞ্জ পেয়ে তবে মাঠ ছাড়ল।