সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাজাখস্তানের (Kazakhstan) অশান্তি অব্যাহত। রবিবার সে-দেশের হিংসার ঘটনায় ১৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। দাঙ্গায় অভিযুক্ত ছয় হাজার জনকে গ্রেপ্তার করেছে প্রশাসন। হিংসায় অভিযুক্ত বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিককেও আটক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
গত কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভে উত্তপ্ত মধ্য এশিয়ার দেশ কাজাখস্তান। তেল উৎপাদনকারী দেশে আচমকা তেলেরই দাম মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় শুরু হয়েছে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ। তার আঁচ বাড়তে থাকায় বিক্ষোভকারীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ আখ্যা দেন দেশের প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ট টোকায়েভ (Kassym-Jomart Tokayev) বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালিয়ে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন সেনাকে।
[আরও পড়ুন: কাজাখস্তানে কেন রুশ সেনা মোতায়েন? প্রশ্ন তুলে ফের সংঘাতে জড়াল রাশিয়া-আমেরিকা]
ইতিমধ্যেই ২৬ জনের বেশি সশস্ত্র বিক্ষোভকারীকে নিরাপত্তা রক্ষীরা হত্যা করেছে বলেও সরকারি তরফে জানানো হলেও, বিক্ষোভকারীদের আক্রমণে ১৮ জন পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ড সার্ভিস সদস্যও মারা গিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। সবথেকে বেশি উত্তপ্ত রাজধানী আলমাটি। রবিবার সেখানেই ১০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, গতকালকের হিংসায় ১৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশুও রয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫ হাজার ৮০০ জনকে।
কাজাখস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতি অনুযায়ী রবিবারের হিংসার ঘটনায় প্রাণহানির পাশাপাশি ১৯৮ মিলিয়ন ডলারের সরকারি সম্পদেরও ক্ষতি হয়েছে। শতাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকে হামলা চালিয়ে লুটপাট করা হয়েছে। প্রায় চার শটি যানবাহন ধ্বংস করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ঘিরে বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ কাজাখস্তান, মৃত্যু ১২ নিরাপত্তা কর্মীর
সোমবার কাজাখ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এরলান তুরগুমবায়েভ বলেন, আজ দেশের সব অঞ্চলে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। দেশে শৃঙ্খলা ফেরাতে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চলছে।
এদিকে কাজাখস্তানের এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাশে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া (Russia)। শুক্রবারই সেখানে পৌঁছে গিয়েছে ২৫০০ রুশ সেনা। অশান্ত এলাকাগুলিতে রীতিমতো ঘাঁটি গেড়ে বসেছে পুতিনের সেনাবাহিনী। আর তা নিয়েই প্রশ্ন তুলল আমেরিকা। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশসচিব ব্লিঙ্কেন কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ”সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে, একবার রাশিয়াকে যদি নিজের ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়, তো সেখান থেকে তাদের বের করা খুবই কঠিন। এই অবস্থার কথা মাথায় রাখতে হবে।”