সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংঘ তথা আরএসএসের (RSS) জন্য বাংলা কোনওদিনই সেভাবে উর্বর জমি ছিল না। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে সংগঠন কিছুটা বাড়লেও করোনা পরবর্তী সময়ে ফের ধাক্কা খেয়েছে আরএসএসের কাঠামো। আরএসএস সূত্রের খবর, করোনা পরবর্তীকালে সংঘের অন্তত আটশো শাখা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে অসন্তুষ্ট খোদ আরএসএস প্রধান মোহন ভগবত (Mohan Bhagwat)।
আরএসএস সূত্রের খবর, প্রাক করোনা (Coronavirus) পর্বে রাজ্যে সংঘের ২২০০ শাখা সক্রিয় ছিল। এই শাখাগুলিতে নিয়মিত সংঘসেবকরা মিলিত হতেন, কসরত করতেন, বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সব তছনছ হয়ে যায়। রাজ্যের প্রায় সব শাখাই বন্ধ হয়ে যায়। করোনা পরিস্থিতি মেটার পর গত বছর নভেম্বর মাস থেকে সংঘের নেতারা জেলায় জেলায় গিয়ে শাখাগুলি পুনরায় চালু করার চেষ্টা করেন। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও আটশোর বেশি শাখা নতুন করে চালু করা যায়নি।
[আরও পড়ুন: ‘দলের উপর নিয়ন্ত্রণ নেই মমতার’, কটাক্ষ দিলীপের, পালটা দিলেন কুণাল]
সূত্রের খবর, দক্ষিণবঙ্গে যে সাড়ে ৯০০ শাখা ছিল তার মধ্যে প্রায় সাড়ে তিনশো বন্ধ। মধ্যবঙ্গেও আরএসএসের শ’চারেকের বেশি শাখা নতুন করে চালু করা যায়নি। যদিও উত্তরবঙ্গে ছবিটা আশাপ্রদ। সেখানে অধিকাংশ শাখাই ফের চালু করতে পেরেছেন সংঘ নেতারা। তবে, সার্বিকভাবে ছবিটা আরএসএসের জন্য বেশ উদ্বেগের। সূত্রের খবর খোদ সরসংঘপ্রধান মোহন ভগবত বিষয়টি নিয়ে মৃদু অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এবং মার্চের আগেই সাংগঠনিক কাঠামোকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ‘ভিত্তিহীন’, রাজ্যপালের অপসারণ নিয়ে দায়ের মামলা খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট]
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, রাজ্যে বিজেপির (BJP) সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং অন্তর্কলহের প্রভাব সরাসরি পড়ছে সংঘের সাংগঠনিক কাঠামোতেও। রাজ্যে বিজেপির দুর্বলতার সমানুপাতিক হারে দুর্বল হচ্ছে সংঘও। যদিও তা মানতে নারাজ আরএসএস। সংঘের দক্ষিণবঙ্গের প্রচারপ্রমুখ বিপ্লব রায় বলছেন, এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক। করোনা পর্ব মেটার পর ১৬০০ শাখা চালু হয়েছে। আসলে করোনা কালে সংঘের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ কর্মহীন হয়েছেন। তাঁরা এখন জীবিকার খোঁজ করছে। এই পরিস্থিতিতে শাখার কাজ করা কঠিন। তাছাড়া বেশ কিছু এলাকায় শাখার মূল উদ্যোক্তারা হয়তো উচ্চশিক্ষা বা পেশার তাগিদে অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছেন, তার প্রভাবও পড়েছে আরএসএসের সংগঠনে। নভেম্বর মাস থেকে পুনরায় সব শাখা চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেকটা করা গিয়েছে।