সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোভিড সংক্রমণ রুখতে ৭০ শতাংশ কার্যকর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার (Oxford-Astrazeneca) সম্ভাব্য প্রতিষেধক। যা মর্ডানা বা ফাইজারের টিকার তুলনায় অনেকটাই কম। আবার ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বের মানুষজনের জন্য কতটা কার্যকর এই টিকা (COVID Vaccine), তা নিয়েও প্রশ্ন রয়ে গেল।
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকাই প্রথম প্রতিষেধক প্রস্তুতকারক সংস্থা যাঁরা করোনা টিকার ট্রায়ালের ফলাফল কোনও মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশ করল। ফাইজার ব্রিটেনে, স্পুটনিক ফাইভ রাশিয়ায়, চিনের টিকা বিভিন্ন বাজারে ছাড়পত্র পেলেও তাঁরা ট্রায়ালের ফলাফল কোনও মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশ করেনি। উল্লেখ্য, জার্নালে প্রকাশ করার আগে ট্রায়ালের ফলাফল খতিয়ে দেখেন নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞরা। সেই রিপোর্টই ল্যানসেটে ছাপা হয়। সেদিক থেকে বিচার করলে সাহসী পদক্ষেপ করল এই টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা।
[আরও পড়ুন : ব্রিটেনে গণ টিকাকরণ শুরু, ৯০ বছরের মহিলাই প্রথম নিলেন ফাইজারের ভ্যাকসিন]
মঙ্গলবারই মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেটে (Lanchet) এই সম্ভাব্য করোনা প্রতিষেধকের দ্বিতীয় দফা ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু টিকার সাফল্য নিয়ে একাধিক প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ভারতের বাজারে এই টিকা আনতে চেয়ে ছাড়পত্র চেয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট। তার আগে প্রকাশিত হওয়া এই ফলাফল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এই সম্ভাব্য টিকার ট্রায়াল চলাকালীন একটি মারাত্মক বিভ্রান্তি ঘটে। পরপর দু’টি সম্পূর্ণ ডোজ দেওয়ার কথা ছিল। অথচ দ্বিতীয় দফায় অর্ধেক ডোজ দেওয়া হয়। এই ঘটনা ঘটেছিল ব্রাজিল, ব্রিটেন ও দক্ষিণ আফ্রিকার একাংশে। এই তিন দেশের ট্রায়ালের রিপোর্ট এই মেডিক্যাল জার্নালে তুলে ধরা হয়েছে। অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রাজেনকার বিজ্ঞানীদের দাবি, দু’টি পুরো ডোজ দেওয়া হলে ৬২ শতাংশের কিছুটা বেশি কার্যকরি হয়েছে সম্ভাব্য টিকা। অথচ যাদের অর্ধেক ডোজ দেওয়া হয়েছে তাদের দেহে প্রায় ৯০ শতাংশ সফল হয়েছে অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড। ল্যানসেটে বলা হয়েছে, এই টিকার দুটি সম্পূর্ণ ডোজ নেওয়ার ১৪ দিন পর শরীরে গড়ে ৭০ শতাংশ প্রতিরোধ গড়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে।
[আরও পড়ুন : সাধারণের সাধ্যের মধ্যেই অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিন! জানা গেল দাম]
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিজ্ঞানীদের দাবি, ধারাবাহিক ট্রায়ালে কোনও এই সম্ভাব্য প্রতিষেধকের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। কোনও স্বেচ্ছাসেবীকে হাসপাতালে ভরতি করতে হয়নি। পাশাপাশি, এই টিকা সংরক্ষণ ও বিতরণের প্রক্রিয়াও অনেকটা সহজ। দামও অনেকটা কম রাখা হচ্ছে বলে খবর। তবে অক্সফোর্ডের এই টিকার আমেরিকা-ইংল্যান্ডের মতো দেশে মর্ডানা, ফাইজারকে টেক্কা দেওয়া বেশকিছুটা কঠিন হবে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।