সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইসলাম অবমাননার অভিযোগে শ্রীলঙ্কার এক নাগরিককে পিটিয়ে খুন করেছিল ধর্মান্ধরা। গত ডিসেম্বর মাসের সেই ঘটনায় ছ’জনকে ফাঁসির সাজা দিল পাকিস্তানের (Pakistan) পাঞ্জাব প্রদেশের একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালত। পাশাপাশি, আরও ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: তুলে নেওয়া হতে পারে রাশিয়ার উপর চাপানো নিষেধাজ্ঞা! আচমকা সুর নরম আমেরিকার]
কয়েকমাস ধরে চলা শুনানি শেষে সোমবার এই হত্যাকাণ্ডে রায় দেয় আদালত। এদিন বিচারক জানান, যাঁদের বিরুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ মিলেছে, তাদেরই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ৬ জনই মৌলবাদী দল তেহরিক-এ-লাব্বাইক-এর স্থানীয় নেতাকর্মী। ৭২ জনকে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডও দিয়েছেন লাহোরের আদালতের বিচারপতি নাতাশা নাসিম। যদিও পুলিশ ৮০ জনেরই মৃত্যুদণ্ডের আরজি জানিয়েছিল। এদিকে, যাবজ্জীবন জেলের সাজা পাওয়া ৯ জনকে জরিমানা হিসেবে ২ লক্ষ পাকিস্তানি রুপি মৃতের উত্তরাধিকারির হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
উল্লেখ্য, গতবছর ডিসেম্বরের ৩ তারিখ শিয়ালকোটে শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) এক নাগরিককে গণপিটুনি দিয়ে খুন ও দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে দোষীদের দ্রুত সাজার দাবি জানায় কলম্বো। ওই হত্যাকাণ্ডের জেরে তৎকালীন ইমরান খান সরকারকে রীতিমতো চাপের মুখে পড়তে হয়। দেশটিতে চলা মোল্লাতন্ত্রের নগ্নরূপ ফের জনসমক্ষে প্রকাশ পায় ওই ঘটনার জেরে।
প্রিয়ান্থা কুমারা নামের ওই ব্যক্তি শিয়ালকোটের এক কারখানার এক্সপোর্ট ম্যানেজার ছিলেন। তাঁকেই কারখানার শ্রমিকরা খুন করে পুড়িয়ে দেয়। অভিযোগ, চল্লিশোর্ধ্ব ওই ব্যক্তি পাকিস্তানের মৌলবাদী সংগঠন ‘তহেরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান’ তথা টিএলপির একটি পোস্টার ছিঁড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিলেন। দাবি, ওই পোস্টারে কোরানের কিছু অংশ লেখা ছিল। দু’জন কর্মী তাঁকে পোস্টারটি ছিঁড়তে দেখেছিলেন। এরপরই ক্রমে বিষয়টি রটে গেলে জনরোষের সৃষ্টি হয়। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই ম্যানেজারের উপরে চড়াও হয় ক্রুদ্ধ জনতা। একটি ভিডিও ভাইরাল হয় যেখানে দেখা যায় একদল লোক স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে যাচ্ছে। পরে ওই ব্যক্তিকে খুন করে পুড়িয়ে দেয় তারা।