সুকুমার সরকার, ঢাকা: ঢাকার (Dhaka) কড়া ধমক। কূটনৈতিক চাপের মুখে মাথা নোয়াল পাকিস্তান। অবশেষে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সঙ্গে পাকিস্তানের পতাকা জুড়ে দিয়ে যে ছবি প্রকাশ করেছিল ঢাকার পাক হাইকমিশন, তিনদিনের মধ্যে সেই ছবি সরাতে বাধ্য হল। রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ার (Social Media)পেজ থেকে তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রবিবার ঢাকায় বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানান, ”পাকিস্তান প্রত্যেক দেশের পতাকা নিয়ে বিভিন্ন মিশনের পেজে ছবি আপলোড করেছে। শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশের মিশনে তাদের অর্ধেক পতাকা, আর সেসব দেশের পতাকার ছবি একসঙ্গে দিয়েছে। আমরা তাদের (পাকিস্তান) বলেছি, এটা আমাদের পছন্দ নয়। তারা জানিয়েছে, কোনও অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এই ছবি প্রকাশ করেনি।”
ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের (Pakistan High Commission) ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেখা যায়, কভার ফটোয় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা (National Flag) নিয়ে তৈরি একটি নতুন পতাকা। গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পতাকাকে এক করে প্রকাশ করা হয়। তারপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংবাদমাধ্যম – সর্বত্র বিতর্কের ঝড় ওঠে। বিশ্লেষকরা বলেন, এটি পতাকাবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
[আরও পড়ুন: স্রেফ অভিনয়-মডেলিংই নয়, সিনেমাতেও টাকা ঢালতেন পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা? সন্দেহ ইডির]
বাংলাদেশের বিশিষ্টজনদের মতে, ‘‘এটি পাকিস্তান দূতাবাসের ধৃষ্টতা। তারা এখনও একাত্তরের পরাজয় ভুলতে পারেনি। বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব নিয়ে কটাক্ষ করে। তারা মাঝে মধ্যে বিকৃত পরীক্ষা চালিয়ে দেখে বাংলাদেশের জনগণ প্রতিবাদ করে কিনা। কেবল ছবি নামালেই হবে না। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রকের উচিৎ, তাদের ডেকে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানানো।” ঢাকায় পাকিস্তান হাই কমিশনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
[আরও পড়ুন: শেষ মুহূর্তে বদল, রাজ্য সরকারের বঙ্গবিভূষণ প্রাপকের তালিকা থেকে বাদ অমর্ত্য সেনের নাম]
পতাকার ছবিটি পোস্ট করার পর পাকিস্তান হাইকমিশনের ফেসবুক (Facebook) পেজেও সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। পরে পাকিস্তান হাইকমিশন কমেন্টস অপশন বন্ধ করে দেয়। এরপর সেখানে কেউ কমেন্ট করতে পারেননি। শনিবার বিকেলে বিদেশমন্ত্রকের তরফে সেখানে যোগাযোগ করে ছবিটি সরাতে বলা হয়। কিন্তু রবিবার সকাল পর্যন্তও পাক হাইকমিশনের ফেসবুক পেজের ‘কভার ফটো’তে ছবিটি দেখা যাচ্ছিল। অর্থাৎ ঢাকার বিদেশমন্ত্রক বলার পরও পাকিস্তান হাইকমিশন তা গুরুত্ব দেয়নি। তবে ওইদিন দুপুরে বিদেশমন্ত্রী আবদুল মোমেনের সাংবাদিক বৈঠকের পর কভার ফটো থেকে বিকৃত পতাকাটি সরিয়ে নেয় পাক হাইকমিশন। কিন্তু ফেসবুক পেজে ছবিটি এখনও রয়ে গিয়েছে।