সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক : পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের একটি স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভারতীয় সিনেমার গানে ভারতের পতাকা নিয়ে নাচ করছিল একদল পড়ুয়া। তার জেরে পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করেই ওই স্কুলের লাইসেন্স বাতিল করতে চলেছে পাক প্রশাসন। এর মধ্যে দিয়ে পাকিস্তানের জাতীয়তাবাদী ভাবধারাকে অপমান হচ্ছিল বলে অভিযোগ তাদের। গত বুধবার এবিষয়ে ওই স্কুল মালিককে শোকজের নোটিস পাঠিয়েছে ডিরেক্টরেট অফ ইন্সপেকশন অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন অফ প্রাইভেট ইনস্টিটিউশন সিন্ধ (DIRPIS)।
গত সপ্তাহে ওই স্কুলের অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই সমালোচনা শুরু করে পাকিস্তানের কিছু কট্টরপন্থী। তারপরই নড়েচড়ে বসে ডিআইআরপিএসের আধিকারিকরা। মামা বেবি কেয়ার কেমব্রিজ এই স্কুলের রেজিস্ট্রেশন সাসপেন্ড করে, ঘটনাটির তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করে। বর্তমানে ওই অনুষ্ঠানে স্কুলের কোন কোন পড়ুয়া ভারতীয় গানের সঙ্গে নাচছিল আর তাদের পিছনে কারা ভারতের পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেসব খতিয়ে দেখছে ওই কমিটি।এ প্রসঙ্গে ডিআইআরপিআইএসের রেজিস্ট্রার রাফিয়া জাভেদ জানিয়েছেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভারতীয় সংস্কৃতির প্রচার পাকিস্তানের জাতীয়তাবাদী ভাবধারার বিরোধী। কোনও অবস্থাতেই এই ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। বিষয়টি জানতে পারার পরেই স্কুলের মালিককে এব্যাপারে তিনদিনের মধ্যে জবাবদিহি করতে বলা হয়েছে। তিনি যদি তা দিতে না পারেন, তাহলে ওই স্কুলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে। আসলে এটা খুবই স্পর্শকাতর একটা বিষয়। এই বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে ওই এলাকায় জনরোষ তৈরি হতে পারে।’
কুলভূষণ মামলায় ১৮ তারিখ আন্তর্জাতিক আদালতে মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান
ডিআইআরপিআইএসের পক্ষ থেকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হলেও ওই স্কুলের মালিক এখন পর্যন্ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি বলে জানা গেছে। এমনকী তাঁকে পাঠানো শোকজ নোটিসের কোন জবাবও দেননি। তবে স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল ফতিমা জানান, পড়ুয়াদের বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতন করতে গত সপ্তাহে স্কুলে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে সৌদি আরব, আমেরিকা, মিশর, পাকিস্তান ও ভারত সহ অন্যান্য দেশের সংস্কৃতিকে নাচগানের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা হয়। কিন্তু, কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ স্কুলের ক্ষতি করার জন্য নির্দিষ্ট একটা অংশের অনুষ্ঠানকে বিকৃতভাবে সবার সামনে তুলে ধরেছে।
ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করি, ঘুরপথে পালটা দেওয়ার বার্তা আমেরিকার!
তবে পাকিস্তানে এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়, এর আগে এক যুবক বাড়ির ছাদে ভারতের পতাকা তোলায় তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছিল পাক প্রশাসন। আসলে দেশের মাটিতে থাকা কট্টরপন্থী ও মৌলবাদীদের হাতেই যে সেদেশের প্রশাসনের প্রাণভোমরা রয়েছে, তা এই ধরনের ঘটনার মধ্যে দিয়ে বারবার প্রমাণিত হয়।