সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দু’দশকের খোলা হাওয়ার পর আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরেছে তালিবান। তবে গৃহযুদ্ধের জেরে বিধ্বস্ত দেশটির অর্থনীতি। চরম রাজনৈতিক ডামাডোলে বিপর্যয় নেমে এসেছে সাধারণ মানুষের জীবনে। দেখা দিয়েছে প্রবল খাদ্য সংকট। এহেন পরিস্থিতিতে দুস্থ আফগানদের জন্য খাদ্যসামগ্রী পাঠাতে তৎপর হয়েছে ভারত। কিন্তু এই চেষ্টায় বাদ সেধেছে পাকিস্তান (Pakistan)।
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানের আফগান দূতাবাসে ফিরছে তালিবান! ইসলামাবাদের অনুমতিতে জেহাদিদের স্বীকৃতির ইঙ্গিত?]
বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, আফগানিস্তানে খাদ্য সংকটের মোকাবিলায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় নয়াদিল্লি। স্থলপথে ট্রাকে করে সেগুলি পাকিস্তানের ভিতর দিয়ে আফগানিস্তানে পৌঁছনোর কথা ভাবা হয়েছিল। যার জন্য প্রয়োজন অন্তত ৫ হাজার ট্রাকের। এই বিপুল পরিমাণের পণ্য পাঠাতে রাস্তা ব্যবহারের জন্য ইসলামাবাদের অনুমতি চেয়েছিল ভারত। এই মর্মে গত মাসেই ভারত চিঠি দিয়ে পাক সরকারের অনুমতি চায় যাতে ট্রাকগুলি পাকিস্তানে ঢুকতে পারে। সেই প্রস্তাবে সরাসরি না করেনি পাকিস্তান। কিন্তু তাদের দেশের ভিতর দিয়ে সেই ট্রাকগুলি যাওয়ার অনুমতিও এখনও পর্যন্ত দিয়ে উঠতে পারেনি ইসলামাবাদ। ফলে আফগানিস্তানে ত্রাণ পৌঁছনোর বিষয়টি পুরোপুরি আটকে রয়েছে।
উল্লেখ্য, তালিবানের (Taliban) দখলে চলে যাওয়া আফগানিস্তানে দ্রুত ফুরিয়ে যেতে বসেছে খাদ্য ও অন্যান্য জীবনদায়ী রসদ। বিধ্বস্ত সেদেশের অর্থনীতি। এহেন পরিস্থিতিতে যুদ্ধজর্জর দেশটিতে মানবিক বিপর্যয় এড়াতে গত অক্টোবর মাসে ১২০ কোটি ইউরো আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। চিন ও তুরস্কের মতো কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই সেখানে ত্রাণ পাঠানো শুরু করেছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রসংঘের মানবতা বিষয়ক সমন্বয় দপ্তর জানিয়েছিল, দ্রুত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে চলেছে আফগানিস্তান। রাষ্ট্রসংঘের মুখপাত্র জেন্স লার্ক জেনেভায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, সেদেশের লক্ষ লক্ষ আফগান নাগরিক বড় সমস্যার মুখে। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার মুখে।
এদিকে, আফগানিস্তান নিয়ে ভারতের ডাকা একটি সম্মেলনে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মইদ ইউসুফ। আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের থেকে পড়শি দেশগুলি আদৌ সুরক্ষিত কি না, তা নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ১০-১১ নভেম্বর একটি সম্মেলনের আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। পাকিস্তানের পাশাপাশি, চিন, তুরস্ক, ইরান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তানের মতো দেশকেও বৈঠকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ভারত।