সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী পদ খোয়াতেই ইমরান খানের (Imran Khan) বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় শুরু হয়েছে তদন্ত। ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন উপহার হিসেবে পাওয়া একটি দামি হার সরকারি তোষাখানায় জমা না করে বিক্রি করে দেন তিনি।
[আরও পড়ুন: দু’দিন সরকারি ছুটি নয়, অফিসে হাজিরা সকাল ৮টায়, প্রথমদিনই ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী শাহবাজের]
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সদ্য ক্ষমতা হারানো ইমরানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পাকিস্তানের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি)। ইতিমধ্যে একটি তদন্তকারী দলও গঠন করে ফেলেছে তারা। জানা যাচ্ছে, এফআইএ-র কাছে জমা পড়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন একটি বহুমূল্য হার উপহার পান ইমরান খান। কিন্তু নিয়মের সম্পূর্ণ বিপরীতে হেঁটে এক স্বর্ণব্যবসায়ীর কাছে ১৮ কোটি টাকায় সেই অলঙ্কার বিক্রি করে দেওয়া হয়। ইমরানের তৎকালীন স্পেশ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট জুলফিকর বুখারিকে দিয়ে সেই কাজ করানো হয়।
পাকিস্তানের নিয়ম মতে, অন্য রাষ্ট্র, ব্যক্তি বা সংস্থা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে যে উপহার দেওয়া হয়, তা সরকারি তোষাখানায় জমা করতে হয়। কোনও প্রধানমন্ত্রী যদি সেই উপহার নিজের কাছে রাখতে চান তবে বস্তুটির অর্ধেক মূল্য দিয়ে তাঁকে সেটা কিনে নিতে হবে। কিন্তু দেখা গিয়েছে, অনাস্থা প্রস্তাবের জেরে গদি হারানোর পর মাত্র কয়েক লক্ষ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন ইমরান। বাকি অর্থ কোথায় গেল, তার স্পষ্ট কোনও হিসাব নেই।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সাময়িক স্বস্তি পান শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif)। গত সোমবার ‘পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ’-এর প্রেসিডেন্ট শরিফের বিরুদ্ধে চলা আর্থিক নয়ছয়ের মামলা মুলতুবি রাখে পাকিস্তানের স্পেশ্যাল এফআইএ কোর্ট। ইমরানের দলের নেতা তথা পাকিস্তানের প্রাক্তন আইনমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী অভিযোগ জানিয়েছেন যে লাহোরে এফআইএ পক্ষের প্রধান আইনজীবীকে আদালতে হাজির না হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে মামলাটির রায়দান আটকে যায়।
পাক রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, পাকিস্তানের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির প্রবেশ ঘটেছে। দেশটির বর্তমান শাসকদল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের নেতা নওয়াজ শরিফ ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ইমরানের খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের একাধিক নেতা এবং খোদ ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পাকিস্তানের রাজনীতিতে কেউই ধোয়া তুলসীপাতা নয়। যার হাতে ক্ষমতা থাকে সেই প্রতিপক্ষকে দুর্নীতি মামলার জালে ফেলে নাজেহাল করে।