সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্পূর্ণ উলটো ঘটনার সাক্ষী থাকল আন্তর্জাতিক মঞ্চ! সাধারণত সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগে পাকিস্তানের (Pakistan) বিরুদ্ধে সরব হয় ভারত (India)। এক্ষেত্রে হরিদ্বারের ধর্ম সংসদে (Haridwar Dharma Sangsad) মুসলিম নিধনের বার্তা দেওয়া নিয়ে ইসলামাবাদে ভারতীয় হাই কমিশনের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিকে ডেকে পাঠাল পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক। অন্যদিকে আজই হরিদ্বার থানার একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, যে স্বঘোষিত গুরুদের বিরুদ্ধে হিংসার বার্তা ছড়ানোর অভিযোগ। তাঁদের সঙ্গে হাস্যমুখে এক পুলিশ আধিকারিক। এমনকী ভিডিওতে অভিযুক্ত সাধুদের বলতে শোনা যায়, উনি (পুলিশ আধিকারিক) আমাদের পক্ষে।
পাক বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, “বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত যে প্রকাশ্য সভায় ভারতীয় মুসলিমদের হত্যার ডাক দেওয়া হয়েছে হরিদ্বারে।” এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন পাকিস্তান সরকার। তাদের সেই উদ্বেগ ভারত সরকারের কাছে পৌঁছে দিতেই হাই কমিশনের শীর্ষ কূটনীতিককে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: ধর্মীয় সভায় গান্ধীজির হত্যাকারীর প্রশংসা, রায়পুরে স্বঘোষিত ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে মামলা]
হরিদ্বারে আয়োজিত ধর্ম সংসদে যতি নরসিংহানন্দ মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার ডাক দিয়েছিলেন। মুসলিম গণহত্যায় হিন্দুদের হাতে অস্ত্র তুলে নিতে বলা হয় সেদিন। ওই ঘটনায় স্বামী ধর্মদাস, সাধ্বী অন্নপূর্ণা এবং সম্প্রতি ওয়াসিম রিজ়ভি থেকে ধর্মান্তরিত জিতেন্দ্র নারায়ণ সিংহ ত্যাগীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কেউই গ্রেফতার হননি। এই পরিস্থিতিতেই সোমবার ইসলামাবাদের ভারতীয় হাই কমিশনের শীর্ষ কূটনীতিক সুরেশ কুমারকে ডেকে পাঠায় পাক বিদেশ মন্ত্রক। ঘটনায় পাক সরকার উদ্বিগ্ন, সেই বার্তা দেওয়া হয়। মনে করা হচ্ছে, পাকিস্তানের এই কূটনৈতিক পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক স্তরে মুখ পুড়েছে ভারতের।
এছাড়াও রায়পুরের একটি ধর্মসভার বক্তৃতায় মহাত্মা গান্ধীকে অবমাননার অভিযোগ উঠেছিল স্বঘোষিত ধর্মগুরু কালীচরণ মহারাজের (Godman Kalicharan Maharaj) বিরুদ্ধে। অভিযোগ ছিল ওই ‘ধর্ম সংসদ’-এ গান্ধীজির হত্যাকারী নাথুরাম গডসের (Nathuram Godse) প্রশংসা করেছিলেন তিনি। এরপর কালীচরণ মহারাজের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন রায়পুরের প্রাক্তন মেয়র। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভঙ্গের অভিযোগে মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি হরিদ্বারের ধর্মসভায় প্রকাশ্যে সংখ্যালঘুদের গণহত্যার বার্তা দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি এনভি রামানাকে চিঠি লিখেছেন দেশের ৭৬ জন আইনজীবী৷
[আরও পড়ুন: হরিদ্বারের ধর্মসভায় সংখ্যালঘুদের খুনের হুমকি! বক্তাদের শাস্তির দাবিতে কমিশনকে চিঠি তৃণমূলের়়]
এত সবের পরেও চিত্রটা খুব একটা বদলায়নি, বোঝা গেল আজ প্রকাশ্যে আসা সন্তদের বিতর্কিত ভিডিওতে। যেখানে দেখা গেল, হিংসার বার্তা ছড়ানোয় অভিযুক্ত ধর্মগুরুদের সঙ্গে হাস্যমুখে হরিদ্বারের পুলিশ আধিকারিক রাকেশ কথাইত। হরিদ্বার থানার ওই ভিডিওয় অভিযুক্ত সাধুদের বলতে শোনা গেল, “উনি (পুলিশ আধিকারিক) আমাদের পক্ষে।”