সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানে (Pakistan) তুঙ্গে রাজনৈতিক ডামাডোল। ইমরান খানের সমর্থকদের বিক্ষোভে উত্তাল ইসলামাবাদ। মুদ্রাস্ফীতির মারে নাজেহাল জনতা। কিন্তু তবুও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মুখে সেই কাশ্মীর (Kashmir) ইস্যু। শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে আনার দাবি জানালেন শাহবাজ। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাস রপ্তানি হলেও তাঁর যুক্তি, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বজায় রাখার দায় ভারতের (India)।
এপ্রিলে ইমরান খানকে হঠিয়ে মসনদে বসার পর শুক্রবার প্রথম জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন শাহবাজ। কিন্তু দিশানির্দেশহীন সেই বক্তব্যে পাক অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা বা সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়গুলি কার্যত কোনও গুরুত্বই পেল না। পাকিস্তানের চিরাচরিত ‘গোল্ডেন রুল’ মেনে আমজনতার সামনে সেই কাশ্মীর টোপ ফেললেন শাহবাজ। পাক প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বহাল রাখার দায় ভারতের। ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার যে একতরফা ও বেআইনি পদক্ষেপ ভারত সরকার করেছে তা রদ করুক তারা। তাহলেই, আলোচনার মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীর সমস্যাআর সমাধান হবে।”
[আরও পড়ুন: হিন্দু ধর্মস্থান ধ্বংসই ছিল লক্ষ্য! হামলা করেছিলেন পুরীর মন্দিরেও, কে ছিলেন কালাপাহাড়?]
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ক্ষমতায় এসে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও ইমরান খান দু’জনেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বভাবক করার উপর জোর দিয়েছিলেন। যদিও সেই প্রয়াস যে সফল হয়নি সেটা স্পষ্ট। কিন্তু মসনদে বসেই যেভাবে কাশ্মীর নিয়ে গলাবাজি করছে শাহবাজ, তাতে বিশ্লেষকদের ধারণা। দেশের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি থেকে জনতার নজর সরাতেই এই আস্ফালন। এদিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে শাহবাজ বলেন “আগের সরকার দেশকে ধ্বংস করেছে। জনগণের অনুরোধে আমরা দুর্নীতিবাজ সরকার পরিবর্তন করেছি। দেউলিয়া হওয়া এড়াতে জ্বালানির দাম বাড়ানো জরুরি ছিল। আগের সরকার ভর্তুকি ঘোষণা করেছিল যা কোষাগার দ্বারা সমর্থন করা যায় না। আমরা আমাদের নিজেদের স্বার্থে দেশকে প্রাধান্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”
উল্লেখ্য, গত ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেয় মোদি সরকার। ফলে উপত্যকায় আর কোনও আলাদা সংবিধান, আলাদা পতাকা রইল না। সেই সঙ্গে রাজ্যের মর্যাদাও হারায় ভূস্বর্গ। তারপর থেকেই ৩৭০ ধরা ফেরানোর দাবিতে গলাবাজি করছে পাকিস্তান। বলে রাখা ভাল, ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় ৩৭০ ধারায় জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হলেও সেই মর্যাদা স্থায়ী ছিল না, বরং ছিল অস্থায়ী সংস্থান (‘টেম্পোরারি প্রভিশন’)। কিন্তু এই ধারারই ৩ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ইচ্ছে করলে এই ‘বিশেষ মর্যাদা’ তুলে নিতে পারেন।