সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল পাকিস্তানে ডাক্তারি পাঠরত হিন্দু ছাত্রী নম্রিতা চান্দানিকে। তদন্তে নয়া মোড় দিয়ে এমনটাই প্রকাশ পেয়েছে ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টে। ফলে চাপে পড়ে ‘আত্মহত্যার তত্ত্ব’ খারিজ করে দিলেন তদন্তকারীরা। সেই সঙ্গে হত্যাকারীর খোঁজে নতুন করে তদন্ত চালাতে বাধ্য হল পাকিস্তান পুলিশ।
সিন্ধুপ্রদেশের ঘোটকি জেলার মীরপুর মাথেলো এলাকার বাসিন্দা নম্রিতা, বিবি আসিফা ডেন্টাল কলেজের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী ছিলেন। পড়াশোনার জন্য কলেজের হোস্টেলেই থাকতেন। তাঁর ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। হোস্টেলের অন্য ছাত্রীরা অনেকক্ষণ ধরে ডাকাডাকি করলেও দরজা খোলেনি। সন্দেহ হওয়ায় দরজার ফাঁক দিয়ে ঘরের ভিতরে উঁকি মেরে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেন তাঁরা। আর তখনই চোখে পড়ে খাটের উপর গলায় দড়ি বাঁধা অবস্থায় ঝুলছেন নম্রিতা। পরে ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে হোস্টেলের নিরাপত্তারক্ষীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, ডেন্টাল পড়ুয়া ওই হিন্দু ছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন। তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানিয়ে দেওয়া হয়, ঘটনাটি ‘আত্মহত্যা’র। কিন্তু মৃত্যুর এই তত্ত্বকে কোনওভাবেই মানতে চায়নি মৃতার পরিবার। তাঁদের দাবি নিমরিতাকে খুন করা হয়েছে। এ নিয়ে তুমুল হইচই শুরু হয় সিন্ধ প্রদেশে। নিমরিতার মৃত্যুর সঠিক তদন্তের দাবি তোলেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা। বিক্ষোভের আঁচ লাগে গোটা পাকিস্তানেই।
খুনের অভিযোগ এনে একটি এফআইআর দয়ের করে নম্রিতার পরিবার। তারপর ওই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয় পাক সরকার। পুলিস ঘটনার তদন্তে নেমে ৩২ জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে ওই ছাত্রীর দু’জন সহপাঠীও রয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, নম্রিতার বাড়ি সিন্ধ প্রদেশের ঘোটকি জেলায়। ওই মাসেই হযরত মহম্মদকে অপমান করার অভিযোগে এক হিন্দু শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপরই শুরু হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা। এদিকে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, হস্টেলের যে ঘর থেকে ওই পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেই ঘরের উচ্চতা ১৫ ফুট। ফলে নম্রিতা পক্ষে সিলিং ফ্যানে ফাঁস লাগানো একেবারের অসম্ভব। এই সব দিকগুলি খতিয়ে দেখার ব্যাপারে তদন্তকারীদের আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানে হিন্দু ছাত্রী হত্যা, ‘অজানা আতঙ্কে’ তদন্তে না বিচারকের]
The post ধর্ষণ করে খুন করা হয় পাকিস্তানের হিন্দু ছাত্রীকে, ময়নাতদন্তে প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য appeared first on Sangbad Pratidin.