সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রেম কাঁটাতার মানে না ঠিকই, তবে প্রেমিক কিংবা প্রেমিকা যদি শত্রু দেশের হয় তবে রাষ্ট্রনেতাদের ভ্রু খানিক কুঞ্চিত হবে এটাই স্বাভাবিক। পাকিস্তানী মহিলা সীমা হায়দারের পর এবার প্রেমের টানে সীমান্ত টপকে ভারতে হাজির হলেন মহবীশ নামে এক পাক যুবতী। ভারতীয় যুবকের সঙ্গে সৌদি আরবে গিয়ে বিয়েও সেরে ফেলেছেন দুজন। গোটা ঘটনার কথা জানায় পর স্বামী ও পাক তরুণীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন রহমানের স্ত্রী।
জানা গিয়েছে, রাজস্থানের চুরু জেলার বাসিন্দা রহমান। কর্মসূত্রে কুয়েতে থাকেন তিনি। সেখানে থেকেই সোশাল মিডিয়ার দৌলতে এক পাক যুবতীর সঙ্গে প্রেম হয় তাঁর। এর পর ২০২২ সালে ভিডিও কলের মাধ্যমে বিয়ে করেন দুজনে। ২০২৩ সালে মক্কায় গিয়ে ফের আনুষ্ঠানিক বিয়ে করেন তাঁরা। এর পর গত ২৫ জুলাই ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারতে আসেন ওই পাক মহিলা। রহমানের পরিবারের লোকেরাই তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রহমানের স্ত্রী ফরিদা। তাঁর অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়নি তার পরও এভাবে বিয়ে করতে পারেন না রহমান। পাশাপাশি ওই যুবতী গুপ্তচর হতে পারেন বলেও সন্দেহ করেন তিনি। বিষয়টি জানার পর পুলিশ রহমানের বাড়িতে গিয়ে মহবীশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। খতিয়ে দেখা হয় তাঁর পাসপোর্ট ও ভিসা।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০১১ সালে বিয়ে হয়েছিল রহমান ও ফরিদার। তাদের দুই সন্তানও রয়েছে। তবে সম্প্রতি পারিবারিক সমস্যার কারণে রহমানের বাড়ি ছেড়ে নিজের বাবার বাড়িতে এসে থাকছিলেন ফরিদা। পাশাপাশি ওই ২৫ বছর বয়সি পাক যুবতী মহবীশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে সে লাহোরের বাসিন্দা। ছোটবেলায় বাবা মায়ের মৃত্যুর পর ইসলামাবাদে এক বোনের কাছে থাকত সে। ২০০৬ সালে বিয়ে হয়েছিল ওই পাক যুবতীর। পাকিস্তানে তাঁর দুই সন্তানও রয়েছে। যাঁদের বয়স ১২ ও ৭। ২০১৮ সালে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সোশাল মিডিয়ায় রহমানের প্রেমে পড়েন ওই যুবতী। সেখান থেকে আলাপ ও মক্কায় বিয়ে সেরে এবার সীমান্তপারে 'শ্বশুরবাড়ি'তে হাজির হয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: তিন আঙুলে মমি! ভিনগ্রহী নয়তো? পেরুতে ঘনাচ্ছে রহস্য]
বিষয়টি নিছকই প্রেম ও বিয়ে হলেও, ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের কূটনৈতিক টানাপোড়েনের দিক থেকে এই সম্পর্কের একেবারেই স্বাভাবিকচোখে দেখছেন না তদন্তকারীরা। বিয়ের আড়ালে ভারতে গুপ্তচরবৃত্তির কোনও ষড়যন্ত্র ওই মহিলার রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এই ঘটনা দেশে একেবারে নতুন নয়, এর আগে পাকিস্তান থেকে ভারতে এসে ভারতীয় যুবককে বিয়ে করেছিলেন পাক যুবতী সীমা হায়দার। মুসলিম ধর্মাবলম্বি ওই যুবতী ভারতে এসে হিন্দু হয়ে যান। পাশাপাশি রাজস্থানের বাসিন্দা অঞ্জু নামে এক যুবতী পাকিস্তানে গিয়ে বিয়ে করেন নাসরুল্লা নামে একজনকে।