সুকুমার সরকার, ঢাকা: শারদোৎসবের আনন্দ পরিণত হয়েছে আতঙ্কে। মৌলবাদীদের হামলায় প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা। সত্তরের দশকে খান সেনার সেই অত্যাচারের নারকীয় অধ্যায় যেন আবার অভিনীত হচ্ছে দেশটিতে। কুমিল্লা, ফেনি-সহ একাধিক জায়গায় ঘরবাড়ি পুড়েছে হিন্দুদের। আর এই সমস্ত হামলার নেপথ্যে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে থামছে না সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা, পুড়ল হিন্দুদের ৬৫টি ঘর]
গত বুধবার অর্থাৎ অষ্টমীর রাতে বাংলাদেশের একাধিক পুজোমণ্ডপে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। তারপর থেকেই শুরু হয় হিন্দুদের উপর লাগাতার হামলা। এপর্যন্ত নোয়াখালির ইসকন মন্দিরের এক সদস্য-সহ খুন হয়েছেন চারজন সংখ্যালঘু। পুলিশ সূত্রে খবর, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোরান অবমাননা করে একটি পোস্ট দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়তেই হামলার ঘটনাগুলি ঘটছে। মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর-সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে লুটপাট কাণ্ডে কার্যত মুখ পুড়েছে হাসিনা সরকারের। হামলার ঘটনার পরই ভারতের বিদেশমন্ত্রক উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও বাংলাদেশে থামেনি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা। বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর, শনিবার রাতে আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামী। সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন নিয়ে হাসিনা সরকারকে খানিকটা কড়া বার্তাই দেন তিনি।
বাংলাদেশের (Bangladesh) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের দাবি, পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই বাংলাদেশের পুজো মণ্ডপে হামলা চালানো হয়েছে। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করতেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছিল বলে জানালেন। বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের একাংশ মনে করছেন, হামলার ঘটনার নেপথ্যে পাকিস্তানের হাত রয়েছে।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রদপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, আফগানিস্তানে তালিবান শাসন কায়েম হওয়ার পর ঢাকাতেও সক্রিয়তা বেড়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের। যেভাবে গুজব ছড়ানো হয়েছে, এবং সঙ্গে সঙ্গে দুষ্কৃতীদের রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে, বিভিন্ন জায়গায় আগেই তাদের জড়ো করে রাখা হয়েছিল। হেফাজতে ইসলামির একাংশ এবং জামাত-ই-ইসলামির মতো কয়েকটি মৌলবাদী সংগঠনকে ব্যবহার করে আইএসআই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দারা।