নন্দন দত্ত ও দেব গোস্বামী: পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election 2023) আগে গোঁজ প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। হুঁশিয়ার করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও (Abhishek Banerjee)। তবুও টনক নড়েনি বহু ক্ষুব্ধ প্রার্থীর। এবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সরাসরি তাঁদের সাসপেন্ড করছে দল। রবিবার বীরভূমের ৩০ বিক্ষুব্ধকে সাসপেন্ড করল তৃণমূল (TMC)।
জেলা তৃণমূলের (TMC) দলীয় কার্যালয় থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে জেলার বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা গিয়েছে, খয়রাশোল ব্লকের ১৯ জন, মুরারই-১ ব্লকের ৭ জন,সিউড়ি-১ ব্লকের ১ জন, রাজনগর ব্লকের ১ জন, রামপুরহাট-২ ব্লকের ১ জন এবং দুবরাজপুরের ১ নেতা-কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দলের বিরোধিতা করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, দলের নির্দেশ অমান্য করে মনোনয়নপত্র জমা করেছিলেন তাঁরা। দলীয় প্রতীক না পেয়েও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। গোঁজপ্রার্থী হিসেবে দলের মাথাব্যথা বাড়িয়েছিলেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: ‘ঘুমিয়ে পড়ায় সিগন্যাল দেখতে পাননি চালক’, ওন্দার দুর্ঘটনা নিয়ে বিস্ফোরক রেলকর্তা]
সাধারণ মানুষের ভোটে বেছে নেওয়া প্রার্থীকে দলের কেউ মেনে না নিলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এবার পুরুলিয়া থেকে অভিষেক জানালেন, প্রার্থীকে কেউ না মানলেই বহিষ্কার করা হবে। প্রার্থী না হতে পেরে অনেকেই সাময়িকভাবে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ান। পরে আবার তাঁদের ফিরে আসতে দেখা যায়। এবার অভিষেক সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রার্থী না হতে পেরে যাঁরা নির্দল হয়ে লড়বেন, তাঁদের আর কখনই দলে নেওয়া হবে না। সেই নির্দেশ মেনেই এবার বীরভূমের ৩০ জন নেতাকর্মীকে সাসপেন্ড করা হল। তাঁদের মধ্যে অন্তত ১০ জন অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বলেই খবর।
প্রসঙ্গত, বীরভূমে সুদীপ্ত ঘোষ ও কাঞ্চন অধিকারীর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। সুদীপ্ত বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির সদস্য। অনুব্রত মণ্ডল থাকাকালীন খয়রাশোল ব্লকের তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন সুদীপ্ত ঘোষ। স্বভাবতই সুদীপ্তর সঙ্গে খয়রাশোল ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারীর ঘরোয়া ঠান্ডা লড়াই রয়েছে। প্রকাশ্য়ে না এলেও বেশ কয়েকবার দুপক্ষের মধ্যে গৃহযুদ্ধ বাঁধে। পরে অবশ্য সুদীপ্ত ঘোষকে পর্যবেক্ষক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলেই রাজনৈতিক মহলের মত। আর এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রভাবেই বহু নেতা-কর্মী মনোনয়ন তুলেছিলেন। এ প্রসঙ্গে বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় জানিয়েছেন, “দল আগেই সতর্ক করেছিল। দলের নির্দেশ না মানলে সাসপেন্ড করা হবে। সেই অনুযায়ী এদিন পদক্ষেপ করা হল।”