গোবিন্দ রায়: পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনাকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া মামলায় চাঞ্চল্যকর নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। জয়ী সমস্ত প্রার্থীর ভাগ্য নির্ভর করবে মামলার ভবিষ্যতের উপর। অর্থাৎ গণনাপর্ব মেটার পরও গোটা ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটল না। এ বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (State Election Commisssion) কাছে রিপোর্ট করেছে আদালত। কমিশন যাঁদের জয়ী ঘোষণা করেছেন, তাঁদের জয় মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের রায়ের পরেই চূড়ান্ত হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ২০ জুলাই।
প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের (TS Sivagnanam) বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘কমিশনের ভূমিকা খুব সন্তোষজনক নয়।’ সার্বিকভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় উষ্মাপ্রকাশ করে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, “আজও কোনও অফিসার হাজির নেই তাদের বক্তব্য জানানোর জন্য। ৬৯৮টি বুথে কীসের ভিত্তিতে পুনর্নির্বাচন হল, তার ব্যাখ্যা দিতেও প্রস্তুত নয় কমিশন। কোর্ট বুঝতে পারছে না, এত সতর্কতার পরেও কিছু গোলমাল ঠেকানো গেল না।”
[আরও পড়ুন: ‘পদ ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত’, পঞ্চায়েতে বিপুল জয়ের পর কুণাল ঘোষের নিশানায় রাজ্যপাল]
প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ,”পুলিশ নাগরিকের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হলো কিছু ক্ষেত্রে। রাজ্য যদি তার নাগরিককে নিরাপত্তা না দিতে পারে তাহলে সেটা খুব গুরুতর ব্যাপার। কমিশন হলফনামা দিয়ে জানাক তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে। তারপরে কোর্ট বিবেচনা করবে।” আদালত বলছে, “এর আগে বহু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে দুটি অর্ডার সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। বাকিগুলোর হয়নি। তাই আদালত ধরে নিচ্ছে সেই অর্ডার মান্যতা দেবে কমিশন।”
[আরও পড়ুন: ‘পদ ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত’, পঞ্চায়েতে বিপুল জয়ের পর কুণাল ঘোষের নিশানায় রাজ্যপাল]
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মোট তিনটি মামলা দায়ের হয়েছিল। এর মধ্যে একটি মামলা দায়ের করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেই মামলার প্রেক্ষিতে হাই কোর্ট জানাল, “ভোটের দিন আদালতের দেওয়া নির্দেশগুলি ঠিকমতো পালন করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে কোর্ট। পাশাপাশি রাজ্যের হিংসা কবলিত এলাকাগুলির ভিডিয়ো ফুটেজ সংরক্ষণ করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
আদালতের এই পর্যবেক্ষণের সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ প্রশ্ন করছেন,”আদালত কি টিভি দেখে চলবে? নাকি সংবাদপত্র পড়ে চলবে? ৬১ হাজার বুথে শান্তিপূর্ণ ভোট হল, অথচ সামান্য কয়েকটা অশান্তির খবর নিয়ে উত্তেজনা। আদালতের এই মানসিকতার জন্যই বিরোধীরা উৎসাহ পাচ্ছে। সন্ত্রাসে মদত পাচ্ছে।”