shono
Advertisement

Panchayat Election 2023: ‘আগে রাস্তা পরে ভোট’, উন্নয়নের তাল কাটল ‘তৃণমূলেরই’ তিন গ্রাম

ঝাগগ্রামের তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে অভিযোগ।
Posted: 03:24 PM Jul 05, 2023Updated: 04:24 PM Jul 05, 2023

সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: আগে রাস্তা, পানীয় জল, সেচের ব্যবস্থা তার পর ভোট। বঞ্চনার অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election 2023) বয়কট করলেন ঝাড়গ্রাম তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের আদিবাসী অধ্যুষিত তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামের ন্যূনতম পরিষেবাটুকু পাননি বলে অভিযোগ তাঁদের। বারংবার প্রতিশ্রুতি মিললেও কোনও কাজ হয়নি। তাই এবার ব্লকের বিডিও এবং থানায় লিখিতভাবে জানিয়ে ভোট বয়কটের রাস্তায় গেলেন গ্রামবাসীরা। ভোট বয়কটের পোস্টারও সাঁটালেন তারা।

Advertisement

ঝাড়গ্রামের জামবনি ব্লকের পড়িহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ধাদিকা সংসদের অন্যতম একটি বুথ মার্মুদা। এই বুথের মার্মুদা, হড়কাশোল, বামদিয়া গ্রামের বাসিন্দারা ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিভিন্ন সরকারি সুযোগসুবিধা থেকে আদিবাসী অধ্যুষিত এই তিনটি গ্রাম বঞ্চিত রয়েছে। গত ১৫ বছর ধরে গ্রামের রাস্তা এতটাই খারাপ যে চলাচলের উপায় নেই। সামান্য বৃষ্টিতেই এক হাঁটু জল জমে। এবড়ো খেবড়ো এই রাস্তায় বর্ষার সময় অসুস্থ রোগী বা গর্ভবতী মহিলাদের নিয়ে যেতে কোন অ্যাম্বুল্যান্স বা কোনও গাড়ি আসতে চায় না। প্রায় ১০ কিমি দূরে চিল্কিগড় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী নিয়ে যেতে প্রবল সমস্যায় পড়তে হয় গ্রামবাসীদের। বর্ষাকালে গ্রামের ছেলেমেয়েরা স্কুল,কলেজ যেতে পারে না। অভিযোগ, স্থানীয় পড়িহাটির কাপাশিটা থেকে মার্মুদা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা একেবারে বেহাল। এছাড়াও এই সরকার এলাকায় সেচের জল এবং পানীয় জলের সেরকম কোনও ব্যবস্থা করেনি বলেও অভিযোগ। প্রশাসনকে বারে বারে আবেদন নিবেদন জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। তাই এবার ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছেন তারা। আর ইতিমধ্যে গ্রামবাসীরা রাস্তা,পানীয় জল ও সেচের জন্য জলের ব্যবস্থা না হলে ভোট দেবেন না বলে লিখিতভাবে জানিয়েছেন ব্লক প্রশাসন ও জামবনি থানায়। গ্রামে সাঁটিয়েছেন পোস্টার। গ্রামবাসীদের সাফ কথা আগে রাস্তা, পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে তারপর তাঁরা ভোট দেবেন। কোনও প্রতিশ্রুতিতে এবার আর কাজ হবে না।

[আরও পড়ুন: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস নওশাদের! থানায় তরুণী]

 

মার্মুদা ও হড়পাশোল গ্রামে মোট ৭৩টি পরিবার রয়েছে। সেখানে পানীয় জলের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটিও সাবমার্সেবল করা হয়নি। তবে বামদিয়া গ্রামে একটি সাবমার্সেবল রয়েছে। সেই গ্রামে ৩০টি পরিবার রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ গ্রামের মানুষজনেরা কুয়োর জল পান করেন। যার ফলে মাঝেমধ্যেই পেটের অসুখ লেগে থাকে। এবিষয়ে মার্মুদা গ্রামের বাসিন্দা, মাঝি বাবা বৃন্দাবন হাঁসদা বলেন, “আমাদেরকে শুধু ভোটের সময় ব্যবহার করেন। আর বাকি সময় আমাদের দিকে কোনও নেতা,মন্ত্রী ঘুরেও তাকায় না। তাই আমরা ঠিক করেছি আগে সেচের জন্য জল, পানীয় জল ও রাস্তা চাই , তারপর ভোট। আমরা ভোট দেবে না বলে প্রশাসনকে আগেই জানিয়ে দিয়েছি।”

[আরও পড়ুন: আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হাই কোর্টে শুভেন্দু]

উল্লেখ্য পড়িহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত ছিল তৃণমূলের দখলে। এর অধীন ধাদিকা সংসদেও তৃণমূল সদস্য ছিল। কিন্তু অভিযোগ গ্রামে ন্যূনতম উন্নয়নের কাজ হয়নি। এবার ধাদিকা সংসদে তৃণমূল একটি, বিজেপি একটি, নির্দল দু’টি প্রার্থী দিয়েছে। ভোট বয়কট বিষয়ে জামবনির বিডিও সৈকত দে বলেন, “আমরা ওঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলাম। বলেছিলাম রাস্তা,জল,সেচের ব্যবস্থার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা ব্লকের হাতে নেই।পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়ে কাজগুলি করে দেওয়া হবে। আর সেই জন্য একটু সময় লাগবে।” ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তরুন বেজ বলেন, “স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও আদিবাসী পিছনে পড়া গ্রামের কোনও উন্নয়ন হয়নি। আমি নিজে ওখানে গিয়েছিলাম। রাস্তা খুবই খারপ। পানীয় জল,সেচের ব্যবস্থা নেই। অথচ এরা বলছে জঙ্গলমহল হাঁসছে।” জামবনি ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি তন্ময় পানি বলেন ” ওখানে প্রশাসনের লোক জন গিয়েছিলেন। ভোট পক্রিয়া মিটলে দাবি যা রয়েছে তা পূরণ হবে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার