গোবিন্দ রায়: পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election) সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ও বুথ চত্বরে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন হোক। চায় কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এটা স্বাভাবিক পরিস্থিতি নয়, এটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। যদি প্রতি ভোটগ্রহণ চত্বরে দুই বাহিনীর দুজন করে প্রতিনিধি দেওয়া যায়, তাহলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেতে পারে। তবে বাহিনীর অনুপাত কী হবে তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নোডাল অফিসার বিএসএফ আইজি।
ভোটকেন্দ্রে পোলিং অফিসারদের নিরাপত্তার দাবিতে মামলা করেছিল শিক্ষকদের সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। ভোটকর্মীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে বলে এই আরজি জানিয়েছিল তারা। সেই প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ এদিন এই পরামর্শ দিয়েছে। বাহিনী ভাগাভাগি ও নিরাপত্তার বিষয়টির দায়িত্বে থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল অফিসার বিএসএফের আইজি। তাঁকেই সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভার দিয়েছে আদালত।
[আরও পড়ুন: মার্টিনেজের অনুষ্ঠান মঞ্চে জ্বলজ্বল করছে এটিকে মোহনবাগান লোগো! তুঙ্গে বিতর্ক]
সোমবার রাজ্য় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, প্রতি বুথে সশস্ত্র বাহিনী থাকবে। বাহিনীর মধ্যে ভাগাভাগি করা হচ্ছে না। ফলে বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, বুথে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করবে না কমিশন। এদিন আদালতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে। রাজ্য সরকার দাবি করেছিল, ৭০% থাকবে রাজ্য পুলিশ। বাকি ৩০% থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাজ্যের সেই আবেদন এদিন খারিজ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
রাজ্যের যুক্তি, প্রতি বুথে ৪ জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করলে বাহিনী কম পড়ে যাবে। কেন্দ্রের হিসেব অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রায় ৬০ হাজার জওয়ান আসছে রাজ্যে। প্রায় ৭০ হাজার রাজ্য পুলিশ থাকবে। তাই সেক্ষেত্রে ৫০-৫০ অনুপাতে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে প্রস্তাব দেন কেন্দ্রের আইনজীবী।
দুপক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, যদি প্রতি ভোটকেন্দ্র চত্বরে দুই বাহিনীর দুজন করে দেওয়া যায় তাহলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেতে পারে। এটা স্বাভাবিক পরিস্থিতি নয়, এটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। যদিও চূড়ান্ত রায়ে আদালত জানিয়েছে, বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্যের পুলিশ মিলিয়ে মিশিয়ে ব্যবহার করা হোক। আইনজীবীদের ব্যাখ্যা, মারামারি, রক্তপাত, লাগাতার মামলার প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি পরিস্থিতিকে অস্বাভাবিক বলেছেন। বুধবার এ ব্যাপারে নোডাল অফিসারকে বক্তব্য জানাতে হবে আদালতে।