স্টাফ রিপোর্টার, পুরুলিয়া ও মানবাজার: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুরুলিয়ায় (Purulia) জয়ী কুড়মি সমর্থিত দুই নির্দল প্রার্থী। পুরুলিয়া দু’ নম্বর ব্লকের আগয়া-নড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের (Panchayat Election) তিন নম্বর ডুমুরডি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেন কুড়মি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী রঘুনাথ মাহাতো। একইভাবে বান্দোয়ান ব্লকের ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গামান্না দু’নম্বর সংসদ থেকে কুড়মি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী শিবানী রাজওয়ার জয়লাভ করেন। এই দুটি আসনেই একাধিক প্রার্থী থাকলেও মঙ্গলবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন তারা তা প্রত্যাহার করে নেন। তারপরই জয় আসে কুড়মি সমর্থিত নির্দলদের। এদিন রাতে আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা (প্রধান নেতা) অজিতপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ” ওই দুটি এলাকায় স্থানীয় মানুষজন কুড়মি নেগাচারি মেনে তারাই প্রার্থী ঠিক করেন। সেখানে একাধিক প্রার্থী থাকলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ফলে ওই দুটি আসনে কুড়মি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী জয়লাভ করল। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কুড়মি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী জয়লাভ করার বিষয়টিকে আমরা আন্দোলনের সাফল্য হিসাবে দেখছি।”
পুরুলিয়া দু’নম্বর ব্লকের আগয়া-নড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন নম্বর ডুমুরডি আসনে মোট তিনজন নির্দল প্রার্থী ছিলেন। জয়ী রঘুনাথ মাহাতো ছাড়া আরও দুই প্রার্থী বিশ্বজিৎ মাহাতো ও বিপ্লবকুমার মাহাতো মনোনয়ন প্রত্যাহার করা নেন। অন্যদিকে বান্দোয়ান ব্লকের বান্দোয়ান গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গামান্না দু’নম্বর সংসদে দু’জন নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন করেন। তাঁরা হলেন শিবানী রাজওয়াড় ও রেখা কালিন্দী। রেখা কালিন্দী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় কুড়মি সমর্থিত নির্দল শিবানী রাজওয়াড় এদিন জয়লাভ করেন। পুরুলিয়া জেলা পরিষদে বিজেপির ছটি আসনে যে ছটি গোঁজ প্রার্থী ছিল তা প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু পুরুলিয়া জেলা পরিষদের তৃণমূলের তিনটি আসনে দলের তিন গোঁজ প্রার্থী রয়ে গিয়েছেন। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের দুই নম্বর আসনে অশ্বিনীকুমার মাহাতো। ২৯ নম্বর আসনে গীতাঞ্জলি মাহাতো। তাঁর স্বামী মানবাজার এক নম্বর ব্লক তৃণমূলের যুব সভাপতি কিশোর মাহাতো। একইভাবে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের ৩৬ নম্বর আসনে রঘুনাথপুর দু’নম্বর ব্লক এলাকায় সুলতান আনসারি দলের গোঁজ হিসেবে রয়ে গিয়েছেন। এছাড়া পুরুলিয়া জেলা পরিষদের ১৯ নম্বর আসনে কীর্তনচন্দ্র মাহাতো তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন জমা করলেও দলীয় তরফে টিকিট না পাওয়ায় দল ছেড়ে দেন। এদিন তিনি মনোনয়নও প্রত্যাহার করে নেননি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল নেতৃত্ব তাকে গোঁজ হিসাবে দেখছে না।
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতের টিকিট বিলিতে দুর্নীতির অভিযোগ, দলের জোড়া পদ থেকে সরলেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী]
পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “জেলা পরিষদের তিনটি আসনে গোঁজ প্রার্থী রয়ে গিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে দল কড়া পদক্ষেপ নেবে। ” এদিন রাত পর্যন্ত পাওয়া খবরের ভিত্তিতে তৃণমূল, বিজেপি বা সিপিএম পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছে এমন খবর পাওয়া যায়নি। পুরুলিয়া জেলা বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ১৬২ জায়গায় বিজেপির প্রার্থী নেই তার অধিকাংশ গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে অন্যান্য প্রার্থীদের স্থানীয় স্তরে বোঝাপড়া হয়েছে।