সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: গুড়-বাতাসা, নকুলদানা নয়। এখানে ভোট যার যার, তার তার। কিন্তু ভোটের বোঁদে, ছোলা, শরবত সবার। শান্তিপূর্ণ ভোটে এমনই ছবি পুরুলিয়ায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে নির্দলের ‘সেরেস্তা’-তে এলেই শনিবার মিলছিল সকালের জলখাবার।
লোকসভা, বিধানসভা বা গ্রামীণ ভোট পঞ্চায়েত (Panchayat Election), যাই হোক না কেন, ভোটের দিনে প্যাকেট-প্যাকেট বোঁদে, এক হাতা ভরতি ছোলা। সেই সঙ্গে শরবত মাস্ট। ভোটে যে এটাই রেওয়াজ ছোটনাগপুর মালভূমির পুরুলিয়ায় (Purulia)। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আড়শা থেকে বলরামপুর। অযোধ্যা পাহাড় থেকে ঝালদা। জেলার প্রায় সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলির বাইরে এক ছবি।
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটের পরই রাজ্যসভার প্রস্তুতি তৃণমূলের, রবিবার তলব সব বিধায়ককে]
যেমন শনিবার আড়শার ঝুঁঝকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কিছুটা দূরে কুড়মি সমর্থিত নির্দল প্রার্থীর শিবিরের বাইরে পেল্লাই সাইজের দু’টি পাত্রতে দেখা গেল বোঁদে। একটি পাত্রে প্লাস্টিক দিয়ে প্যাকেট করা। আর আরেকটি পাত্রে ডাই করে সাজা রয়েছে। নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে বোঁদে নিয়ে বসে থাকা সুনীলচন্দ্র মাহাতো, হীরালাল মাহাতো বলেন, “রাঁধুনি ডেকে ২০ কেজি বেসনের বোঁদে করা হয়েছে। মোট ৮০০ প্যাকেট করেছি আমরা।” এখানে দুটি বুথ মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ৬০০ ভোটার রয়েছে। কুড়মি সমর্থিত নির্দল শিবির থেকে কিছুটা পেছনেই বিজেপির শিবির। সেখানে প্রার্থীরাও রয়েছেন।
ওই শিবিরের বিজেপি কর্মী নির্মল সহিস বলেন, “রাত থেকে ১০ কেজি ছোলা ভিজতে দিয়েছি। ২০ প্যাকেট বোঁদে তৈরি করা হয়েছে। শরবতের জন্য ৫ কেজি চিনি আছে। ভোট দেওয়ার পর আমাদের সেরেস্তায় যেই আসছে তাদেরকেই আমরা ছোলা, বোঁদে দিচ্ছি।” কিন্তু কেন? ওই বিজেপি কর্মীর কথায়, “দেখুন ভোট দেওয়াটাও তো একটা পরিশ্রম। কত দূর-দূর থেকে মানুষজন ভোট দিতে আসছেন। প্রার্থীদের জয়-পরাজয় আছে ঠিকই।ভোটারদের পরিশ্রমেরও তো একটা মূল্য দিতে হবে। আমরা শুধু জলখাবারটাই তুলে দিচ্ছি এই যা।” কিন্তু এ তো রীতিমতো ভোটারদের প্রভাবিত করা!
[আরও পড়ুন: নেতড়ায় ব্যালট নষ্ট, ‘ভাইপোর কেন্দ্র’ বলে ভুল তথ্য অমিত মালব্যর, সত্যি জানাল তৃণমূল]
নির্দল প্রার্থী শিবিরের পাশেই রাস্তার ওপরে থাকা তৃণমূল ক্যাম্পের কর্মী হেমন্তকুমার বলেন, “আমরা দু’কুইন্টাল বোঁদে তৈরি করেছি। সেই সঙ্গে ৫০ কেজি ছোলা আছে। আমাদের সেরেস্তায় যেই আসছেন তাকেই আমরা দিচ্ছি। এর মধ্য দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার কোন বিষয়-ই নয়। কারণ ভোটাররাই আমাদের কাছে আসছেন এই জলখাবার নিতে। ” ভোট দেওয়ার পর এই জলখাবার পেয়ে যে ভীষণই খুশি ভোটাররা।