সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) আগে বোমা বাঁধতে গিয়ে ফের মৃত বেলডাঙায়। বৃহস্পতিবার সকালে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার মহেশপুর গ্রাম থেকে এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর চারপাশে বোমার মশলা ছড়ানো ছিল। যা দেখে মনে করা হচ্ছে বোমা বাঁধতে গিয়েই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। শুধু বেলডাঙা নয়, বুধবার রাতে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ডোমকল, জঙ্গিপুর। কোথাও কংগ্রেস কর্মী আক্রান্ত তো কোথাও সিপিএম প্রার্থীকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা করা হয়েছে। চলেছে গুলিও। সবমিলিয়ে ভোটের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে হিংসার আগুনে জ্বলছে মুর্শিদাবাদ। বিস্ফােরণে মৃত্য়ুর জেরে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৭।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম কামাল শেখ। বেলডাঙার ভাবতা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতেের মহেশপুরের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর দেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। আশপাশে বোমা তৈরির মশলা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর, বোমা তৈরি করে একাধিক রাজনৈতিক দলকে সরবরাহ করতেন কামাল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই বোমা তৈরি করছিলেন তিনি। কিন্তু কোন দল তাঁকে বরাত দিয়েছিল, তা এখনও জানা যায়নি। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বেলডাঙায় এই প্রথম নয়, গত ২৪ জুনও বোমা বাঁধতে গিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছিল। এমনকী, ঝলসে গিয়েছিল দুই কংগ্রেস কর্মীও। যদিও কংগ্রেসের তরফে সে কথা অস্বীকার করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে বীরভূমে খুন বিজেপি কর্মী, জলপাইগুড়িতে চলল গুলি]
প্রচার সেরে বাড়ি ফেরার পথে কংগ্রেস কর্মীদের উপর বোমা হামলার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আহত হয়েছেন দুই কংগ্রেস কর্মী। তাদের নাম রিয়াজুল মণ্ডল (৫৫) এবং আজবার মণ্ডল (৩৮)। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের ডোমকলের ঘোড়ামারা পঞ্চায়েত এলাকার নিশ্চিন্তপুর এলাকায়। অভিযোগ, তৃণমূলের প্রার্থী সাজেমা বিবির স্বামী-সহ তার দলবল কংগ্রেস কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। রিয়াজুল মণ্ডলকে ধরে বাঁশ লাঠি দিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগও উঠেছে।
আবার জঙ্গিপুরের সাদিকপুরে এক সিপিএম প্রার্থীকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তাঁকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তাঁর ছেলে মকবুল শেখকে তুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। দু’জনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। বদর শেখ নামে ওই প্রার্থী সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য ও রঘুনাথগঞ্জ ১ পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী। বাবা-ছেলে দু’জনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সোমনাথ সিংহরায়ের অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার ভোরে এই ঘটনায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা জড়িত। দুষ্কৃতীরা প্রথমে বদরের পরিবারের লোকজনের মোবাইল কেড়ে নেয়। তারপর ওই প্রার্থীর উপর হামলা চালায়।” প্রায় দু’ঘণ্টা পর পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।