সুমন করাতি, হুগলি: কৃষক আন্দোলনের ঘাঁটি সিঙ্গুরে ১৬টির মধ্যে সব ক’টি পঞ্চায়েতই দখলে রাখল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। বস্তুত, তৃণমূল ঝড়ে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে বিজেপি ও বাম-কংগ্রেস। ন্যানো কারখানা প্রকল্পের প্রস্তাবিত এলাকা খাসেরভেড়ি, সিংহেরভেড়ি থেকে বাজেমেলিয়া, গোপালনগর, বেড়াবেড়ি পঞ্চায়েতে নিরঙ্কুশ আধিপত্য রাজ্যের শাসকদলেরই।
এই সব পঞ্চায়েতগুলিতে টিমটিম করে একটি বা দু’টি আসনে জিতেছে বিরোধীরা। গ্রামসভায় সিপিএমের (CPM) তুলনায় অবশ্য বিজেপির ফল কিছুটা ভাল, তবে তৃণমূলের সঙ্গে তুলনাতেই নেই। অন্যদিকে, সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির ৪৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জয়ী হয়েছে ৪৭টি আসনে, বাকিটিতে জয় পেয়েছেন সিপিএম প্রার্থী। সমিতিতে হরিপালের ৪৫টির মধ্যে সব ক’টিতেই অবশ্য জয়ী তৃণমূল। ভোটের দিন এখানে বিন্দুমাত্র সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলতে পারেনি বিরোধীরাও। তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া, সিঙ্গুর যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) দলের উপর এবং উন্নয়নে ভরসা রেখেছে, তাতে আমরা কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মন্ত্রী বেচারাম মান্নাও। পাশের হরিপালেরও ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতও তৃণমূলের দখলে।
[আরও পড়ুন: কয়লা পাচার মামলায় ফের মলয় ঘটককে তলব ইডি’র, দিল্লি যাবেন মন্ত্রী?]
উন্নয়ন ও তৃণমূলের সংগঠনের পাশাপাশি বিজেপির জনমানস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়াও প্রভাব ফেলেছে। হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু জেতার পর থেকে তাঁকে আর এলাকায় দেখা যায়নি বলেই অভিযোগ মানুষের। ভোট প্রচারে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল সাংসদকে। এদিনের জয়ের পর বেচারাম মান্না বলেন, ‘‘এই জয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের জয়। সিঙ্গুরের মানুষের আশীর্বাদ সব সময় তৃণমূলের সঙ্গেই ছিল। সিঙ্গুরের এলাকার মানুষের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে তৃণমূল সরকার, আর মানুষ তাই উন্নয়নের পক্ষেই ভোট দিয়েছে।’’
[আরও পড়ুন: রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের বক্তব্যের অপব্যাখ্যা দিয়ে বিতর্কে, কে এই অমোঘ লীলা দাস?]
সিঙ্গুরের (Singur) ফল নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই টানটান উৎসাহ ছিল এলাকাবাসীর। গণনার সময় থেকে সকলেই নজর রেখেছিলেন। একের পর এক ফল বেরতেই দেখা যায়, মির্জাপুর, বাঁকিপুর, বলরামবাটি থেকে শুরু করে আনন্দপুর, নসিবপুরেও ব্যাপক ফল তৃণমূলের। সবুজ আবির মেখে জয়োল্লাস করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।