রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: একসময়ের বোমা-বন্দুকের পীঠস্থান খেজুরিতে ফিরছে লাল ঝান্ডা। প্রায় ১২ বছর পর এবার পঞ্চায়েত ভোটে খেজুরি ১ ও ২ ব্লক মিলে প্রায় ৭০টি ক্যাম্প অফিস তৈরি করে ফের নিজেদের পুরনো মাটি যে শক্ত করতে চাইছে সিপিএম, তা অনেকটাই পরিষ্কার। তৃণমূল-বিজেপির লড়াইয়ের মাঝে ধীরে ধীরে নিজেদের হারিয়ে যাওয়া মাটি পুনরুদ্ধারে সিপিএম মন দিয়েছে, তা এবারের ক্যাম্প অফিসের সংখ্যা দেখেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে খেজুরির সিপিএম প্রার্থী হয়েছিলেন রাজ্য কমিটির সদস্য হিমাংশু দাস। সেবার দু’টো ব্লক মিলে মেরেকেটে ১০-১২ ক্যাম্প অফিস দিতে পেরেছিল সিপিএম। তাও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ক্যাম্প অফিসগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের অধিকাংশ ক্যাম্প ছিল রাস্তার পাশে লাল টেবিল আর চেয়ার। কিন্তু এবার ছাউনি দিয়ে তৈরি করা হয় ক্যাম্প অফিস। সেই ক্যাম্প অফিস থেকে এলাকার ভোটারদের বিভিন্ন সহযোগিতা করা হয়। ছোলা মুড়ি খাওয়ানোর ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল। যা ২০১১ সালের পরে খেজুরি এলাকায় বিরল।
[আরও পড়ুন: ভালবাসার দোকান না, ‘কংগ্রেস মানে লুটের দোকান, মিথ্যের বাজার’, রাজস্থানে বললেন মোদি]
খেজুরিতে এক সময়ের ত্রাস ছিলেন হিমাংশু দাস। তিনি নিজে এবার প্রার্থী হননি। তবে নতুন মুখদের প্রার্থী করে বাড়ি বাড়ি ঘুরেছেন হিমাংশু। খেজুরির মাটিকে তিনি যে হারাতে রাজি নন, এবারের ভোটে লাল ঝান্ডা তারই প্রমাণ।
২০১১-য় রাজ্যে পালা বদলের পরে খেজুরি এলাকা থেকে লাল ঝান্ডা যেন ইতিহাসে পরিণত হয়। যে লাল ঝান্ডা একসময় প্রমাণ দিত খেজুরি আসলে বামেদের লাল দুর্গ। শেষ ১২ বছরে সেই দুর্গে লাল ঝান্ডার অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোট থেকে ফের লাল ঝান্ডা মাথা তুলে দাঁড়াতে শুরু করেছে। সিপিএম নেতাদের দাবি, সিপিএম কর্মীরা গা বাঁচাতে বিজেপিতে গিয়েছিল। তারা অনেকে সিপিএমে ফিরে প্রার্থী হয়েছে। সিপিএমের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরছে বলেও দাবি তাঁদের। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হিমাংশু দাস বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনে হাতে গোনা দলীয় ক্যাম্প করতে পেরেছিলাম। এবার দুটি ব্লকে ৭০টি ক্যাম্প করেছি। মানুষের আস্থা ফিরছে সিপিএমের প্রতি। বিজেপি থেকে ফিরে প্রার্থী হয়েছে। তৃণমূলের চুরি আর বিজেপির লোকঠকানো নীতির বিরুদ্ধে মানুষের আশ্রয় যে সিপিএম, তা জনতা বুঝতে শুরু করেছে।”