সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে প্রতিরোধের আরেক নাম পঞ্জশির (Panjshir)। ‘সিংহের উপত্যকা’ বারবার রক্তাক্ত করেছে তালিবানকে (Taliban)। এবারও পাহারঘেরা প্রদেশটি থেকে জেহাদিদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বিখ্যাত মুজাহিদ কমান্ডার আহমেদ শাহ মাসুদের পুত্র আহমেদ মাসুদ। তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহ। তালিবানের শান্তি আলোচনার পালটা পঞ্জশিরের যোদ্ধারা বার্তা দিয়েছেন, ‘কথা নয়, যুদ্ধ হবে।’ কিন্তু শুক্রবার উদ্বেগ উসকে পঞ্জশির দখল করার দাবি জানিয়েছে তালিবান।
[আরও পড়ুন: যুগযুগান্ত ধরে নারকীয় যন্ত্রণা সহ্য করেছেন যৌনদাসীরা, তাঁদের অভিজ্ঞতা আজও শিহরণ জাগায়]
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, পঞ্জশির দখল করা হয়েছে বলে দাবি জানিয়েছে এক তালিবান কমান্ডার। তার বক্তব্য, “আল্লার আশীর্বাদে এখন গোটা আফগানিস্তান আমাদের দখলে। বিদ্রোহীদের দমন করে পঞ্জশির এখন আমাদের কবজায়।” তালিবানের আরও দাবি, পঞ্জশির ছেড়ে পালিয়েছেন আহমেদ মাসুদ ও আমরুল্লা সালেহ। তাজিকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। শুক্রবার পঞ্জশির ‘দখল করার’ আনন্দে রাজধানী কাবুলে প্রচুর গোলাগুলি ছুঁড়ে আনন্দ করতে দেখা যায় তালিব জঙ্গিদের। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও পঞ্জশিরের পতনের খবর ভাইরাল হয়েছে।
এদিকে, তালিবানের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে বিদ্রোহীরা। আমরুল্লা সালেহ পালটা দাবি করেছেন, পঞ্জশিরে প্রচণ্ড লড়াই চলছে। তবে এখনও এখানে থাবা বসতে পারেনি তালিবান। বিদ্রোহীদের নায়ক আহমেদ মসুদ বলেছেন, “পঞ্জশির দখল হয়ে যাওয়ার গুজব ছড়াচ্ছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম।” বলে রাখা ভাল, পঞ্জশিরে আহমেদ মাসুদ ও সালেহর নেতৃত্বে অন্তত ১০ হাজার যোদ্ধা লড়াই চালাচ্ছে। আফগান সেনাবাহিনীর বহু জওয়ানও যোগ দিয়েছে বিদ্রোহী শিবিরে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিগত দিনে কুন্দুজ, বাঘলান,, কপিসা -সহ অন্য প্রদেশগুলি থেকে আফগান ফৌজের জওয়ানরা হাতিয়ার ও গাড়ি নিয়ে পঞ্জশিরে এসে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে শামিল হয়েছে।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তান (Afghanistan) জয় করেও স্বস্তি নেই তালিবানের। এখনও তাদের গলার কাঁটা হয়ে রয়েছে কাবুল থেকে মাত্র ১১০ কিলোমিটার দূরের হিন্দুকুশ ঘেরা স্বাধীন পঞ্জশির। বাধ্য হয়ে ‘ওয়ারলর্ড’ আহমেদ মাসুদ ও সালেহর সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসতে চাইছিল তালেবরা। কিন্তু সেই কথায় কান দেননি তাঁরা। বাবার মতোই জেহাদি গোষ্ঠীটির সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মাসুদ। আর গোড়া থেকেই প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা বলে আসছেন সালেহ। বুধবার সকালে করা এক টুইটে খাভাকের বিদ্রোহী কমান্ডার মুনিব আমিরি জানিয়ে দেন, গতকাল রাতে তারা ৩৫০ তালিবানকে খতম করেছেন। সেই সঙ্গে ৪০ জনকে বন্দিও করেছেন। এর পাশাপাশি বেশ কিছু মার্কিন অস্ত্রশস্ত্র ও যানবাহনও তাঁরা দখল করেছেন বলে দাবি আমিরির। সোমবার রাতে মার্কিন সেনার শেষ বিমান কাবুল ছাড়ে। এরপরই পঞ্জশিরে হামলা চালিয়েছিল তালিবান। তখনও তাদের বেশ কয়েকজন যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছিল বলে দাবি নর্দান অ্যালায়েন্সের।