একসময় ঋতুপর্ণ ঘোষের ব্যোমকেশ ছবিতে সত্যবতী হওয়ার কথা ছিল পাওলি দামের। তখন সে ছবি হয়নি। এই প্রথমবার ব্যোমকেশ ফিল্মে তিনি। ‘ব্যোমকেশ হত্যামঞ্চ’ মুক্তির আগে ধরা দিলেন অভিনেত্রী। তাঁর কথা শুনলেন শম্পালী মৌলিক।
‘অভিযান’-এর ক্যামিও চরিত্রটি বাদ দিলে দু’বছর পর ফের আপনার অভিনীত বাংলা ছবি রিলিজ করতে চলেছে। ১১ আগস্ট ‘ব্যোমকেশ হত্যামঞ্চ’ (Byomkesh Hatyamancha) আসবে, কেমন লাগছে?
খুব ভাল লাগছে। বড়পর্দায় ছবি রিলিজ করুক, সবাই দেখুক, এটাই তো আমরা চাই। মাঝখানে দু’বছর প্যানডেমিক ছিল। আমার সেই সময় আনরিলিজড ফিল্ম কিছু ছিল না। গত দু’বছরে কিছু ছবি রিলিজ হলেও, মানুষ খুব যে দেখতে যেতে পেরেছে তা নয়। ইচ্ছে থাকলেও পারেনি। এখন বিষয়টা ঠিকঠাক জায়গায় এসেছে। লোকজন হলে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে ছবি রিলিজের জন্য এটা ভাল সময়। গত দু’বছরে OTT-তে কাজের সুযোগ পেয়েছিলাম, কিছুটা কনশাসলি ওটিটি-তেই কনসেনট্রেট করেছি। ওই ফেজটার পরে আবার ক’টা বাংলা ছবি করলাম।
যেমন?
একটা ‘ব্যোমকেশ হত্যামঞ্চ’। অন্যটা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পালান’। আরেকটা ইন্দ্রাণী চক্রবর্তীর ‘ছাদ’ এবং তার আগে অর্জুন দত্তর অ্যান্থোলজি-তে ‘বিরিয়ানি’ করেছি।
ব্যোমকেশ ফিল্মে প্রথমবার, নিশ্চয়ই খুশি?
ইয়েস অফকোর্স। প্যানডেমিকের পরে এটাই আমার প্রথম বড়পর্দার রিলিজ। আমি খুব খুশি। বিশেষ করে অরিন্দমদার (শীল) সঙ্গে আমার প্রথম কাজ। বহুবার অরিন্দমদার সঙ্গে ছবির কথা হয়েছে। ওঁর প্রথম ছবি ‘আবর্ত’-র সময় থেকে কথা হয়েছিল কিন্তু তখন করা হয়নি।
এবারে হল কীভাবে?
এটা খুব ভাল টিম। স্ক্রিপ্টটা খুব ভাল লেগেছিল। তারওপর ব্যোমকেশ ফ্র্যাঞ্চাইজি। আবির, সোহিনী, সুহোত্র, কিঞ্জল, অর্ণ সকলে রয়েছে। সবমিলিয়ে আমার ভাল লেগেছিল।
সুলোচনার চরিত্রে আপনি ‘ব্যোমকেশ হত্যামঞ্চ’-তে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিশুপাল বধ’-এর অসমাপ্ত কাহিনির সূত্র ধরে এই ছবি। আপনার চরিত্রটা ঠিক কেমন?
এই চরিত্রটা করতে আমার খুবই ভাল লেগেছে। সেই কারণেই ছবিটা করা। ‘সুলোচনা’ প্রথমত নাট্যকর্মী। ছোট একটা চরিত্র থেকে শুরু করে প্রখ্যাত থিয়েটার ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠে সে। তাকে ঘিরে অনেক নাটক হিট করেছে। বাংলা বাণিজ্যিক থিয়েটারে সে বড় নাম। এই ধাঁচের চরিত্রটা।
[আরও পড়ুন: চিনের চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ সম্মান পেল ‘অপরাজিত’, কী প্রতিক্রিয়া নায়ক জিতুর?]
এই আগস্টে পর পর বাংলা ছবি রিলিজ। আপনাদের সঙ্গেই আবার ‘ধর্মযুদ্ধ’র মুক্তি। প্রচুর ছবি রিলিজ ইন্ডাস্ট্রির জন্য যেমন ভাল, আবার ছবির ভিড়ে হল পাওয়ার লড়াই থাকবে। সেখানে আপনি কতটা আশাবাদী?
আমি আশাবাদী। আমার মনে হয় আরও বাংলা ছবি আসুক। এই তো কত হিন্দি রিলিজ হচ্ছে, তাহলে বাংলা ছবির ক্ষেত্রে অসুবিধা কোথায়। প্রত্যেকটা বাংলা ছবি ভাল শো টাইম পাক, সেটাই চাইব। ভাল চলুক সবক’টা ছবি, সেটাই চাই। দর্শক হল-গিয়ে ছবি দেখলেই তা সম্ভব। খুব কঠিন সময়ে এগুলো বানানো। আর ব্যোমকেশ মানুষ দেখতে পছন্দ করে।
আপনাকে যখন ব্যোমকেশ ফিল্মেই নিলেন অরিন্দম শীল, তখন সত্যবতী করতে ইচ্ছে করেনি?
‘কালবেলা’, ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’ করি যখন আমি, তারপরে ঋতুদার ব্যোমকেশ করার কথা হয়েছিল। বুম্বাদার ব্যোমকেশ করার কথা, আর আমি সত্যবতী। যদিও তারপর হয়নি ছবিটা। তখন অঞ্জনদা ব্যোমকেশ শুরু করল বলে, ঋতুদা ঠিক করল একই ফ্র্যাঞ্চাইজি করবে না। ওই সময় কেরিয়ারের প্রথমদিকে দাঁড়িয়ে ‘সত্যবতী’-র জন্য লোভ ছিল। কিন্তু এতদিনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছি, ফিমেল প্রোটাগনিস্ট হিসাবে বিভিন্ন কাজ করেছি, তারপরে এখন আর সত্যবতী না হওয়া নিয়ে আক্ষেপ নেই। ব্যোমকেশ ইজ অল অ্যাবাউট ব্যোমকেশ। নিশ্চয়ই সত্যবতী আইকনিক চরিত্র। আর এখানে সুলোচনা চরিত্র খুবই তাৎপর্যপূর্ণ, ছবিটা দেখলে বুঝবে। আর সোহিনীকে সত্যবতী হিসাবে খুব ভাল লাগে। লেটস নট ডাইল্যুট দ্যাট।
আবিরের সঙ্গেও অনেকদিন পরে স্ক্রিন শেয়ার করলেন।
আমরা বহুদিনের বন্ধু। একসঙ্গে অনেক কাজ করেছি। তবে ব্যোমকেশ হিসাবে ও যে ছবিতে, সেখানে প্রথম কাজ করলাম। খুব ভাল লাগে আবিরকে ব্যোমকেশ হিসাবে। ব্যোমকেশ-সুলোচনার কেমিস্ট্রি এবং ব্যোমকেশের সঙ্গে অন্য চরিত্রের রসায়ন লোকের ভাল লাগবে। আর এই ব্যোমকেশ-ফিল্ম কিন্তু আগেরগুলোর মতো ট্র্যাভেলগ ধরনের নয়। এটা চেম্বার ড্রামা কিন্তু সম্পর্কের গল্প নয়। রহস্যে মোড়া, ভীষণ ইন্টারেস্টিং, স্ট্রাইকিং দেখতে। কারণ সিনেমা আর থিয়েটার পারফরম্যান্সের মেলবন্ধন ঘটেছে এখানে (হাসি)।
নতুন কাজ?
বাংলা-হিন্দি মিলিয়েই রয়েছে, সময়মতো বলব (হাসি)।