শেখর চন্দ্র, আসানসোল: স্কুলে পাঁচটি শ্রেণি। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা শতাধিক। স্কুলের শিক্ষক একজন। একা কুম্ভের মতো বিদ্যালয় রক্ষা করছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই বেসামাল অবস্থা স্কুলের। ঠিকঠাক ক্লাস হচ্ছে না। বাচ্চারা স্কুলে এসে মিড ডে মিলের খাবার খেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। এমনই অচলাবস্থার অভিযোগ তুলে, দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন অভিভাবকরা। পরে শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ তুলে নেন তাঁরা।
আসানসোল (Asansol) পুরসভার ৯০ নম্বর ওয়ার্ডের রানিগঞ্জ নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে আগে পঞ্চম শ্রেণির পর্যন্ত পড়াশোনা হলেও, এখন তা বন্ধ। শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা কমতে কমতে দাঁড়িয়েছে একে। কিছুদিন আগে পযর্ন্ত দুজন শিক্ষক ছিলেন। তবে এখন শুধু রয়ে গিয়েছেন শিক্ষক স্বরূপ মিত্র। ক্লাস করানো, মিড ডে মিলের বাজার থেকে স্কুলের সব কাজ একার হাতে করছেন তিনি। যার জেরে স্কুলের পড়াশোনাই হচ্ছে না বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।
[আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসায় ‘আক্রান্ত’দের নিয়ে বিক্ষোভের স্থান বদলে রাজি শুভেন্দু, জানালেন আদালতে]
শিক্ষক নিয়োগের দাবি ও স্কুলের পঠন-পাঠন ঠিক রাখতে স্কুল সংলগ্ন রাস্তায় অবস্থান বিক্ষোভে বসেন অভিভাবকরা। বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন আসানসোল পুরনিগমের রানিগঞ্জের বরো ২ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন। তিনি সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে এক ঘণ্টা পর পথ অবরোধ ওঠে। এক অভিভাবক বলেন, " আমাদের ক্ষমতা নেই বাচ্চাদের বেসরকারি স্কুলে পড়ানোর। এই স্কুলে পড়াশোনা ঠিক হয় না। তাহলে কি আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা শিখবে না? স্কুলে তাড়াতাড়ি শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি।" আরও এক অভিভাবক বলেন, "এই বিদ্যালয়ে একজন মাত্র শিক্ষক রয়েছেন। স্কুলে পড়াশোনা বাদে সব কিছু হয়। পড়ুয়াদের সংখ্যা অনেক। এখানে তাড়াতাড়ি শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা হোক।"
একমাত্র শিক্ষক স্বরূপ মিত্র বলেন, "আমাদের স্কুলে ১৯৯৭ সালের পর থেকে কোনও শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। আগে ৮ জন শিক্ষক ও একজন পিওন ছিলেন। এখন আমি একাই রয়েছি। একজন শিক্ষিকা ছিলেন, তিনি গত এপ্রিল মাসে অবসর নিয়েছেন। কাজেই স্কুলের একমাত্র শিক্ষক আমি। আমার একার পক্ষে যতটা করা যায় আমি করি। স্বাভাবিকভাবেই অভিভাবকরা তাতে সন্তুষ্ট নন। আমরা প্রশাসনকে আমাদের শিক্ষকের অভাবের কথা জানিয়েছি। ওঁরা আশ্বাস দিয়েছেন খুব তাড়াতাড়ি স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।"