সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্যারিস অলিম্পিকে এবার যুক্ত হয়েছে কয়েকটি নতুন খেলা। যার মধ্যে আছে ব্রেকিং (Breaking)। মোট ৩২টি খেলার মধ্যে আক্ষরিক অর্থেই ব্রেক ডান্সে মঞ্চ মাতাবেন তারকারা। ২০১৮-য় বুয়েনোস আইরেসের যুব অলিম্পিকে প্রথম অন্তর্ভুক্ত করা হয় এই ইভেন্টকে। প্যারিস অলিম্পিকেও (Paris Olympics 2024) এই ইভেন্টের স্বমহিমায় আবির্ভাব ঘটবে। আমেরিকা, কানাডার প্রতিযোগীরা থাকলেও নজর কেড়েছে আরেকটি নাম।
তিনি মানিঝা তালাশ (Manizha Talash)। দেশ আফগানিস্তান (Afghanistan)। তালিবান অধিকৃত দেশে নারীদের উপর রয়েছে অসংখ্য নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু তাতেও নাচের স্বপ্নে বাধা পড়তে দেননি মানিঝা। বছর ২১-র তরুণীর জন্য মঞ্চটা এখন অনেক বড়। অলিম্পিকের মঞ্চে ঝড় তোলার জন্য তৈরি তিনি। লড়াইটা যদিও একেবারেই সহজ ছিল না। ২০২১-এ আফগানিস্তানে তালিবান দখল নেওয়ার পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তিনি। পাকিস্তানের পথ ঘুরে এসে পৌঁছন স্পেনের রিজিউজি ক্যাম্পে। ফলে এখন আর কোনও দেশ নেই তাঁর। তিনি উদ্বাস্তু।
[আরও পড়ুন: লক্ষ্য IPL খেতাব, জাতীয় দলের প্রাক্তন ওপেনারকে হেড কোচ করতে পারে পাঞ্জাব কিংস]
জীবন বদলে যায় প্যারিসে অলিম্পিকে উদ্বাস্তু খেলোয়াড়দের দলে ডাক পাওয়ায়। এবার মোট ৩৭ জন উদ্বাস্তু প্রতিযোগী অংশ নিচ্ছেন। তার মধ্যে রয়েছেন মানিঝা। তাঁর খেলার সমস্ত খরচ দিচ্ছে অলিম্পিক সংস্থাই। পরে তাঁকে উদ্বাস্তু দলে যুক্ত করা হয়। কিন্তু তাঁর স্মৃতিতে বারবার ফিরে আসছে আফগানিস্তানের ঘটনা। যে ক্লাবে তিনি নাচ অনুশীলন করতেন, সেটাও বাঁচেনি বোমার আঘাত থেকে। তবু তাঁর মুখে শোনা যায়, "আমি আমার স্বপ্ন নিয়ে বাঁচছি। কখনও ভাবিনি জীবন এত সুন্দর হতে পারে।"
তিনি আরও বলছেন, "আমি কৃতজ্ঞ যে এত দূর আসতে পেরেছি। কিন্তু নিজেকে কোনও রোল মডেল ভাবতে চাই না। আফগানিস্তানে যে মেয়েরা প্রতিদিন জীবনের জন্য লড়াই করছে, তাঁরাই আমার আদর্শ। আমার কাছে পদক জেতাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি শুধু আফগানিস্তানের মানুষদের কাছে এটাই প্রমাণ করতে চাই যে ব্রেক ডান্সিং শুধু নাচ নয়, এটা একটা খেলাও। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে শিল্প-সংস্কৃতিও।"
[আরও পড়ুন: শ্যেন নদীতে অভিনব অনুষ্ঠান, প্যারিস অলিম্পিকের উদ্বোধনের অপেক্ষায় বিশ্ব]
তাঁর কথায় উঠে আসে ভারতীয় সিনেমার কথা। মানিঝার মা বলিউড সিনেমা খুবই দেখেন। এবং সিনেমার মতো তাঁর জীবনেও নানা উত্থানপতন। এবার অলিম্পিকের মঞ্চে কি সিনেমার মতোই 'হ্যাপি এন্ডিং' হবে? আফগানিস্তানের জন্য স্বপ্ন দেখছেন মানিঝা।