নব্যেন্দু হাজরা: দশ, বিশ, তিরিশটা নয়। প্রায় আড়াইশোটা সরকারি বাসকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন ডিপোতে বসিয়ে রাখা হয়েছে। যার জেরে রাস্তায় কমেই চলেছে সরকারি বাসের সংখ্যা।
শহরজুড়ে এখন উৎসবের মরশুম। শহরের মানুষ তো রয়েইছেন। জেলা থেকেও হাজার-হাজার মানুষ আসছেন কলকাতায়। যাত্রীরা দীর্ঘক্ষণ বাসের অভাবে দাঁড়িয়ে থাকছেন স্টপেজে। কিন্তু পাচ্ছেন না। বিরক্ত যাত্রীরা ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। বেসরকারি বাসে একপ্রকার বাধ্য হয়েই উঠতে হয় তাঁদের। যাত্রীদের অভিযোগ, দুপুর একটার পর এবং রাতে ৯টার পর রাস্তায় সরকারি বাস একেবারেই কমে যাচ্ছে। শীতকাল বলে যাত্রী কম হবে ধরে নিয়েই হয়তো এই বাসের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি বাস রাস্তায় থামতে থামতে যায়। ভাড়াও বেশি। অথচ পরিষেবা বলে কিছু নেই। কিন্তু পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, বিষয়টা তেমন নয়। আসলে এখন যে কোনও বাসেরই যান্ত্রিক সমস্যা থাকলে তা মেরামত করে নতুন নীল-সাদা রং করে তবে তা নামানো হচ্ছে। যেহেতু শহরে চলা সমস্ত বাসকে একই রঙের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাই সেগুলোকে মেরামত করেই একেবারে নতুনের মতো করে তা নামানো হচ্ছে ধাপে ধাপে। কিন্তু এবার গোলযোগ বেঁধেছে অন্যত্র।
[আরও পড়ুন: আর্থিক প্রতারণা মামলায় ইডির চার্জশিটে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নাম! লোকসভার আগে মাথায় হাত কংগ্রেসের]
এই বাসের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পাঠানো প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ডাব্লুবিটিসি-র অ্যাকাউন্টে না পাঠিয়ে ভুল করে ডব্লুবিএসটিসি-র মানে ভূতল পরিবহণ দপ্তরের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার জেরে বিপাকে পরে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম। বাস রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হলেও টাকা না আসায় তা করতে পারা যাচ্ছে না। আর ডব্লবিএসটিসি-র থেকে সরাসরি ডব্লবিটিসিকে ওই টাকাও পাঠানো যাবে না। ফলে তা আবার ফেরৎ পাঠানো হয়েছে অর্থ দপ্তরে। কিন্তু অর্থদপ্তরের তরফে সেই টাকা এখনও পরিবহণ নিগমকে পাঠানো হয়নি। তাই কাজও শুরু করা যায়নি।
সিএসটিসি, সিটিসি এবং ডব্লুবিএসটিসি মিলিয়ে প্রায় ৭৫০ বাস রাস্তায় নামে। বাকি ২৫০ মতো এখনও বসে। এই বাস নামতে আরও প্রায় মাসখানেক লাগবে বলেই জানাচ্ছেন নিগমের কর্তারা। কিন্তু সামনেই গঙ্গাসাগর। তারপর বইমেলা। গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে শহরের প্রায় আড়াইশোর বেশি বাস বসে যাবে। তখন রাস্তায় বাসের জন্য ভোগান্তি যাত্রীদের আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই তার আগেই এই বসিয়ে রাখা বাসগুলো নামাতে চাইছে নিগম। তারপর বইমেলা স্পেশাল বাস চালানোও রয়েছে। সব মিলিয়ে ভুল অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাওয়াতেই এই বিভ্রাট। নিগমের এক কর্তা জানান, দ্রুত বসিয়ে রাখা বাসগুলো নামাতে না পারলে গঙ্গাসাগরের সময় কিছুটা সমস্যা হতে পারে।