সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: গ্রুপ-ডি কর্মীর স্ত্রীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠল উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল। অভিযোগ, ভুল চিকিৎসার জেরেই মৃত্যু হয়েছে ওই গৃহবধূর। এই ঘটনায় অভিযোগের তির হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মৃণালকান্তি বৈদ্যের দিকে। এর জেরেই উত্তাল হয়ে উঠল হাসপাতাল চত্বর। অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষণা করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন হাসপাতালের গ্রুপ-ডির কর্মীরা। সকালে অভিযুক্ত চিকিৎসক হাসপাতালে পৌঁছালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিক্ষুব্ধ কর্মীরা। পরে উলুবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বেগতিক বুঝে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান চিকিৎসক মৃণালকান্তি বৈদ্য।
[অসুস্থ কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, ভরতি হাসপাতালে]
জানা গিয়েছে, বুকে ব্যথা নিয়ে শুক্রবার রাত বারোটা নাগাদ উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি হন গৃহবধূ দুলালি কর। তাঁর স্বামী লালু কর ওই হাসপাতালেরই গ্রুপ-ডি বিভাগের কর্মী। হাসপাতালের কোয়ার্টারেই তাঁরা থাকেন। রাত বারোটা নাগাদ স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তড়িঘড়ি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে মহিলা ওয়ার্ডে ভরতিও করে দেন। খবর দেওয়া হয় চিকিৎসক মৃণালকান্তি বৈদ্যকে। কিন্তু সুইচ অফ থাকায় তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তাই হাসপাতাল থেকে কলবুক দিয়ে তাঁর আবাসনের পাঠানো হয়। হাসপাতাল চত্বরের আবাসনেই থাকেন ওই চিকিৎসক। অভিযোগ, রোগীর বাড়ির লোকজন কলবুক নিয়ে গেলেও তিনি হাসপাতালে আসেননি। উলটে একটা ওষুধ লিখে রোগীর পরিজনদের হাতে ধরিয়ে দেন। তড়িঘড়ি সেই ওষুধটি কিনে দুলালিদেবীকে খাওয়ানো হয়। রাতেই হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই গৃহবধূর। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিজনরা। অভিযোগ, নিজে না এসে ভুল ওষুধ খাইয়ে দুলালিদেবীকে মেরে ফেলেছেন চিকিৎসক মৃণালকান্তি বৈদ্য। হাসপাতাল চত্বরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
[প্রকাশ্যে টলি অভিনেতাকে মারধর, ফেসবুক লাইভে দুষ্কৃতীদের দাপট]
সকালে চিকিৎসক মৃণালকান্তি বৈদ্য হাসপাতালে প্রবেশ করলে সেই ক্ষুব্ধ গ্রুপ-ডি কর্মীরা তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। খবর পেয়েও রাতে হাসপাতালে কেন এলেন না, তাঁর সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল অভয় দাস ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেন। রাজু কর হাসপাতালের গ্রুপ-ডি কর্মী। তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটলে বাইরের লোকজনের কী হয়? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বলা বাহুল্য, জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠকে হাওড়াতে রয়েছেন হাসপাতালের সুপার সুদীপ কাঁড়ার। তিনি অভিযোগটি শুনেছেন। রাজু করকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অভিযোগ জানাতে বলেছেন। জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত হবে। গাফিলতি প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।