নন্দন দত্ত, সিউড়ি: নাম ভাঁড়িয়ে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড নিয়ে চিকিৎসা করাতে গিয়ে বিপাকে ভিনরাজ্যের এক রোগী। ঘটনাটি ঘটেছে সিউড়ির (Suri)এক বেসরকারি নার্সিংহোমে। বিষয়টি ধরা পড়তেই সরকারি সুবিধায় রোগীর অস্ত্রোপচার আটকে যায়। অন্যদিকে আত্মীয়কে এই কার্ড ধার দিয়ে মস্ত বড় ভুল করেছে, তা বুঝতে পেরে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন সিউড়ির ওই বাসিন্দা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জালিয়াতি ধরা পড়তেই ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডটি (SwasthyaSathi) ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ অভিযোগ জানালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিউড়ির কাছেই পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা সঞ্জিদা বিবি ওরফে গুড্ডি বিবির ভাঙা পায়ে অস্ত্রোপচারের কথা ছিল রবিবার। ঝাড়খণ্ডের রানীশ্বরের একতলা গ্রামের বছর উনত্রিশের গুড্ডি বিবি বাইক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁর পা ভাঙেন। সিউড়ি হাসপাতালে এসে প্লাস্টারের পর দিন পনেরো অপেক্ষার কথা বলা হয়।
পরিবারের দাবি, হাসপাতালেই দালালচক্রের খপ্পড়ে পড়েন তাঁরা। সিউড়ির একটি নার্সিংহোমে আফিজা বিবি নামে ভরতি হন। গুড্ডি বিবির আত্মীয় আফিজা বিবি সিউড়ির লালকুঠি পাড়ার বাসিন্দা। তার বয়সের সঙ্গে গুড্ডির বয়স মিলে যাওয়ায় তার নামে আধার কার্ডটি (Adhar Card) ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড ব্যবহার করা হয় আরেক আত্মীয় লাজিনা বিবির। ফলে একে নাম ভাঁড়ানো, সঙ্গে আধার কার্ডের গন্ডগোল, সঙ্গে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডের জালিয়াতি। স্বভাবতই নার্সিংহোম আপত্তি তোলে। তারা জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানায়।
[আরও পড়ুন: ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে ফর্ম জমা দিলেই নিশ্চিন্ত, মোবাইলে পেয়ে যাবেন ই-রেশন কার্ড]
নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের তরফে প্রদীপ মণ্ডল জানান, ”অসুস্থ রোগীকে তাঁর দেওয়া আধার কার্ডের নাম শুনেই ভরতি করা হয়েছিল। কিন্তু যখন সেটি যাচাই করার কাজ চলছিল, তখনই বিষয়টি আমাদের নজরে আসে।” এদিকে আজিফা বিবি জানান, তাঁর আত্মীয় লাজিনা তাঁর কাছে এসে আধার কার্ডটি চেয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু জানি না কী জন্য তা ব্যবহার করা হবে। তাঁর আরও বক্তব্য, ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড দিয়ে জালিয়াতি করার চেষ্টা হচ্ছে বুঝতে পেরেই সিউড়ি থানায় তিনি লিখিতভাবে বিষয়টি জানান।
[আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্র ছেড়ে গুজরাটে TATA, ‘সরকারে আস্থা নেই বণিক মহলের’, দাবি আদিত্য ঠাকরের]
এদিকে গুড্ডির পরিবারের দাবি, হাসপাতাল থেকে একজন লোক তাঁদের বিনা পয়সায় সব করে দেবে বলে কিছু টাকা নিয়েছে। তার পরামর্শেই এই বিপত্তি। ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডের জেলা আধিকারিক সুকান্ত শিকদার জানান, ”আমাকে সেল থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য থেকে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডটি ব্লক করে দিয়েছি।” তিনি দাবি করেন, জেলায় বেশিরভার ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগ করা হয়েছে। তাই সহজে নাম ভাড়িয়ে জালিয়াতি করা সম্ভব নয়। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ জানালে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা হবে।