তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: কোমর এমআরআই করিয়ে হাতে এল মাথার এমআরআইয়ের রিপোর্ট! অবাক করা কাণ্ডটি ঘটেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (North Bengal Medical College and Hospital)। এমআরআই ও সিটি স্ক্যান পরিষেবা পেতে গিয়ে দালালরাজের রমরমার অভিযোগও সামনে এসেছে। পাশাপাশি রোগীর চাপের অজুহাত দেখিয়ে এমআরআইয়ের সময় না দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে। শুধুমাত্র তাই নয়, দালালদের টাকা না দেওয়ায় এবারে এক মাদ্রাসার শিক্ষকের ভুল এমআরআই (MRI) রিপোর্ট দেওয়া নিয়ে শোরগোল পড়ল।
জানা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার দাসপাড়ার বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক মৌলানা আবু বক্কর সিদ্দিকি কোমরের চিকিৎসা চলছিল। অক্টোবর মাসের শুরুতে চিকিৎসার প্রয়োজনে তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসেন। সেখানে তাঁকে এমআরআই করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এর পর থেকে বারবার এমআরআই করানোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়েও ফল মেলেনি। রোগীর চাপ আছে দাবি করে এমআরআই করানোর সময় নিয়ে চলছিল টালবাহানা।
[আরও পড়ুন: ‘কপিলকে আমন্ত্রণ না জানানো জাতীয় লজ্জা’, জয় শাহকে নিশানা কংগ্রেস-শিব সেনার]
এর পর হাসপাতালে এক দালালের সঙ্গে পরিচয় হয় আবু বক্কর সিদ্দিকির। এমআরআই সময় পাইয়ে দেওয়ার নাম করে পাঁচশো টাকা চাওয়া হয়। সেই টাকা দেওয়ার পর ১৫ অক্টোবর তাঁর এমআরআই করানোর সময় দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট দিনে এমআরআই করানো হলেও রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। সেই দালাল তাঁর কাছে দু’হাজার টাকা দাবি করেছিল সেই টাকা দেওয়া হলে দ্রুত রিপোর্ট দেওয়া হবে বলেও দাবি করেছিল বলে অভিযোগ। যদিও এবারে আর টাকা দেননি তিনি। বার পাঁচেক ঘুরিয়ে দেওয়ার পর নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে শেষ পর্যন্ত তাঁকে রিপোর্ট হাতে দেওয়া হয়। তবে, রিপোর্ট নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতেই আবুবাবু জানতে পারেন কোমর নয়, মাথার এমআরআই রিপোর্ট হাতে পেয়েছিলেন তিনি।
ঘটনার কথা জানতে পেরেই মেডিক্যাল কলেজ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আবু সিদ্দিকি। সোমবার রোগী ও তাঁর পরিবারের অভিযোগ শুনতে তাঁদের তলব করেছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের অভিযোগ শোনার পর সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মেডিক্যাল কলেজের আসিস্ট্যান্ট সুপার গৌতম দাসের বলেন, “আমরা সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। দালাল চক্রের বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।” আবু বক্কর সিদ্দিকি বলেন, “এইভাবে বারবার হেনস্তা সরকারি হাসপাতালে হচ্ছে। এই ঘটনা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর সঠিক বিচার চাইছি।”