সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটা ইঞ্জেকশন। দাম ১৬ কোটি টাকা! একমাত্র ওই মহৌষধটিই পারে ছোট্ট দুধের শিশুটিকে বাঁচাতে। না হলে যে বিরল অসুখে সে ভুগছে তা থেকে নিস্তার নেই। স্বাভাবিক ভাবেই চিকিৎসকদের কাছ থেকে খরচের কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন ৫ মাসের ধাইরয়ারাজসিং রাঠোরের বাবা-মা। মনে হয়েছিল, অত টাকার কয়েক শতাংশই যেখানে জোগাড় করা অসম্ভব, সেখানে তাঁদের সন্তানের রোগমুক্তির কোনও সম্ভাবনাই আর অবশিষ্ট থাকল না। যদিও শেষ পর্যন্ত অভাবিত ভাবেই তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন আড়াই লক্ষেরও বেশি মানুষ। তাঁদের সাহায্যে তোলা সম্ভব হল ওই বিপুল অর্থ। নতুন জীবন ফিরে পেল ছোট্ট শিশুটি।
ঠিক কী অসুখ হয়েছিল আহমেদাবাদের (Ahmedabad) ওই শিশুটির? জানা যাচ্ছে, জন্ম থেকে সে স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি টাইপ-১ নামে একটি নিউরোমাসকুলার রোগে আক্রান্ত। অত্যন্ত বিরল জিনঘটিত এই অসুখ (Rare disease) বিশ্বের প্রতি ১০ হাজার শিশুর মধ্যে ১ জনের হয়। ফলে শিশুটি তার শরীরের কোনও অঙ্গই নাড়াতে পারে না। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে মৃত্যু অবধারিত।
[আরও পড়ুন: কড়া পদক্ষেপ করে রুখে দেওয়া যেতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ, দাবি কেন্দ্রের]
এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় ওই ইঞ্জেকশন। মাত্র ২ বছর আগে মার্কিন সংস্থা অ্যাভেক্সিসের তৈরি করা ওষুধটি ছাড়পত্র পায় আমেরিকায় (US)। পরে ব্রিটেনও এটি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। আসলে ধাইরয়ারাজসিং রাঠোরের মতো যারা ওই রোগে আক্রান্ত, তাদের শরীরে এসএমএন১ জিনটি থাকে না। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে সেটিই তাদের শরীরে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। আর তাতেই শরীরের সব পেশী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়।
কিন্তু সেই ওষুধের দাম ১৬ কোটি টাকা। শিশুটির বাবা রাজদীপ সিং রাঠোরের কথায়, ‘‘বুঝতে পারছিলাম আমাদের যা কিছু আছে সব কিছু বিক্রি করে দিয়ে ও সব সঞ্চয়কে কাজে লাগিয়েও ওই টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়।’’ কিন্তু এরপরই এগিয়ে আসে ‘ইমপ্যাক্ট গুরু’র মতো গণ-তহবিল সংগ্রহকারী সংস্থা। মাত্র ৪২ দিনে ২.৬ লক্ষ মানুষ নিজেদের সাধ্যমতো অনুদান দেন। আর তাতেই উঠে আসে ওই বিপুল অর্থ।
রাজদীপ জানিয়েছেন, যাঁরা টাকা দিয়েছেন তাঁরা কেউ ধনকুবের নন। বেশির ভাগই সাধারণ মধ্যবিত্ত। কিন্তু তাঁদের সকলের চেষ্টাতেই সম্ভব হল এই অসম্ভব। বিরল অসুখ থেকে মুক্তি পেল তাঁদের একমাত্র সন্তান।