সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ভ্যালেন্টাইনস ডে’তে (Valentines’ Day) প্রেমিককে গোলাপ ফুল, নানা উপহারে ভরিয়ে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে ভালাবাসার প্রকাশ ঘটাতে তো দেখা যায় আকছারই। দিনটিতে পার্ক-সহ বিভিন্ন ভ্রমণস্থল প্রেমিকযুগলের গুঞ্জনে মুখর হয়ে থাকে। কিন্তু ফুলমালা দিয়ে গাছকে বরণ করে আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়ে ভালবাসা প্রকাশ এবং তাদের রক্ষা করার শপথগ্রহণ সত্যিই অভিনব ব্যাপার। অরণ্য, বন্যপ্রাণীদের বাঁচাতে ঝাড়গ্রামের (Jhargram) আদিবাসী মানুষজনকে নিয়ে গঠিত বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যরা রবিবার অকৃত্রিমভাবে উদযাপন করলেন ভালবাসার দিনটি। তাঁদের এই উদ্যোগ দেখে খুশি স্থানীয় মানুষজন। পাশাপাশি, পুলওয়ামায় বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনও করলেন তাঁরা।
রবিবার নয়াগ্রাম ব্লকের চাঁদাবালি রেঞ্জের তপোবনের খাস জঙ্গলে (Forest) ভালবাসার দিন উদযাপিত হল অরণ্যের প্রতি ভালবাসার প্রতিজ্ঞায়। পাঁচটি বনসুরক্ষা কমিটির এই কাজে সহযোগিতা করেছে খড়্গপুরের বনবিভাগ।আদিবাসী মানুষজনের কাছে গাছপালা, অরণ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা ভালবেসে গাছকে রক্ষা করেন। এদিন এলাকার আদিবাসী মানুষজনকে নিয়ে গঠিত বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যরা ঘন জঙ্গলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। অরণ্যমাঝে সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করেন। গাছের ডালে পরিয়ে দেওয়া মালা। ফুল দিয়ে জানানো হয় শ্রদ্ধাও। এইভাবে গাছের প্রতি প্রেম, ভালবাসা প্রকাশ করা হয়। গাছ এবং অরণ্যের বন্যপ্রাণ রক্ষার অঙ্গীকার করেন বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যরা। তার সঙ্গে যাতে অরণ্যকে ধ্বংসের মতো বেআইনি কাজ রুখে দেওয়ার বার্তাও দেওয়া হয় অনুষ্ঠানে।
[আরও পড়ুন: পৃথিবীর ওজোন স্তরে ফাটল ধরাতে পারে চিন! অশনি সংকেত গবেষকদের]
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য বনপাল (পশ্চিম চক্র) অশোক প্রতাপ সিং, নয়াগ্রামের ডিএফও শিবানন্দ রাম, রূপনারায়ণ বিভাগের ডিএফও মনীশ কুমার যাদব-সহ বিভিন্ন রেঞ্জের অফিসার উপস্থিত ছিলেন। এদিন অরণ্য রক্ষার বিষয়ে আধিকারিকরা বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি পর্যালোচনা করেন। তবে প্রকৃতির মধ্যে প্রকৃতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানরা প্রকৃতির প্রতি প্রেম নিবেদন করলেন শ্রদ্ধার সঙ্গে, বিনম্রচিত্তে। এই বিষয়ে মুখ্য বনপাল (পশ্চিম চক্র) অশোকপ্রতাপ সিং বলেন, “এদিন ভালবাসার দিনে বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যরা প্রকৃতির প্রতি, গাছের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করেছেন।ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাপ্রকাশ করেছেন। ভালবাসা তো সবসময় প্রকাশের বিষয় না। বুকের ভিতরে তা অনুভব করতে হয়। তাঁরা শপথ নিয়েছেন, গাছ এবং অরণ্য জীবনকে রক্ষা করার।”