নব্যেন্দু হাজরা: ট্রেনে টিকিট নেই। ওয়েটিং লিস্ট লম্বা। বাসেও একই অবস্থা। শনি-রবি এবং ছুটির দিনগুলোয় অনলাইনে কোনও টিকিট বুকিংই হচ্ছে না। দু-একটি বাসে হাতেগোণা কয়েকটি টিকিট থাকলেও রকেটের গতিতে বাড়ছে তার দাম। কারণ বসন্তে পলাশের টানে এখন বাঙালি ছুটছে লালপাহাড়ির দেশে। শান্তিনিকেতন যাওয়ার সমস্ত ট্রেনেই ছুটির দিনে ওয়েটিং লিস্ট লম্বা। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে যাওয়ার হিড়িকও চোখে পড়ার মতো।
আগামী ২৫ ও ২৬ মার্চ দোল এবং হোলি উপলক্ষে ছুটি। আর ২৪ তারিখ পড়েছে রবিবার। ফলে পরপর এই তিনদিনের ছুটিকে কাজে লাগিয়ে বাঙালি ছুটছে পলাশ দেখতে। যারা ট্রেনে-বাসের টিকিট পাননি, এমনকি টানা ছুটিতে ঘর পাননি, তাঁরা কাজে লাগাচ্ছেন গুড ফ্রাইডের ছুটিকে। ২৯ শে মার্চ শুক্রবার গুডফ্রাইডে, সঙ্গে শনি, রবির ছুটিতে লোকে ছুটছেন পলাশের সৌন্দর্য্য দেখতে। পুরুলিয়া যাওয়ার চক্রধরপুর এক্সপ্রেস, রূপসী বাংলা, রাঁচি বন্দেভারত, পুরুলিয়া সুপারফাস্টের মতো ট্রেনগুলোতে এপ্রিল মাসের আগে তেমন টিকিট নেই। একই অবস্থা শান্তিনিকেতন যাওয়ার ট্রেনেও।
[আরও পড়ুন: দোলের ছুটিতে ঘুরে আসুন ‘পিকক ভ্যালি’, কীভাবে যাবেন, থাকবেন কোথায়? রইল হদিশ]
এখন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া জঙ্গলের পর জঙ্গল জুড়ে শুধুই লাল পলাশের আভা। অযোধ্যা পাহাড় থেকে বড়ন্তি, গড়পঞ্চকোট থেকে জয়চন্ডী পাহাড় সর্বত্র লালে লাল। আর তা দেখতেই দোল-হোলির আগে থেকেই পর্যটকদের ঠাসা ভিড়। হোটেল, লজ, সরকারি অতিথি আবাস, কটেজ, রিসোর্ট ঘর ফাঁকা পাওয়া দায়। আর দোল বা গুড ফ্রাইডের ছুটিতে চাহিদা অনুযায়ী বেসরকারি হোটেল, রিসোর্টে ভাড়াও বাড়ছে রকেটের গতিতে। পর্যটকদের কথায়, শুধু তো আর পলাশ নয়, রয়েছে ঝড়া পাতার সৌন্দর্য্যও। অন্যদিকে আগামী শুক্র, শনিবার থেকেই শান্তিনিকেতনে জনসমাগম শুরু হয়ে যাবে। দোলের আগে-পরে বোলপুরে একচিলতে ঘর পাওয়া এখন লটারি পাওয়ার মতো। দেশ -বিদেশের হাজার হাজার মানুষ এই সময়টা ভিড় জমান কবিগুরুর ভূমে। আর তাই সেখানে যাওয়ার জন্যও ট্রেন বাসের কোনও টিকিট নেই শুক্র, শনি-রবিতে। শান্তিনিকেতনগামী চারটি বাস চলে কলকাতা থেকে। সকালে এবং দুপুরে। দোলের আগের দুদিন কোনও বাসে টিকিট নেই।
এনিয়ে পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সপ্তাহ দুই আগেই সব টিকিট শেষ হয়ে গিয়েছে। দোলের পরের দিনের ফেরার টিকিটও এখন পাওয়া যাবে না। ফলে যাঁরা দোলের সময় শান্তিনিকেতন যাবেন ভাবছেন, তাঁদের গাড়ি করে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। দোলের পরের সপ্তাহেও একই অবস্থা। ট্রেনে টিকিট নেই। হোটেলে থাকার ঘর নেই। ‘‘বসন্তোৎসবের জের কিছুদিন তো চলবেই। তাই গোটা মার্চ মাসই পর্যটকদের ভিড় থাকে শান্তিনিকেতনে।’’–বলছিলেন সেখানকার এক হোটেলের মালিক। পূর্ব রেলের এক আধিকারিক জানান, ‘‘দোলের সময় পলাশ দেখতে যান প্রচুর মানুষ। তাই এই সব জায়গা গুলোয় যাওয়ার জন্য টিকিটের বিপূল চাহিদা থাকে।’’