রমাকান্ত মহাওয়ার: লেখা শুরু করার আগে ‘বিটা’ (Beta) নামক ধারণার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিই। বিটা দিয়ে যে কোনও লিস্টেড স্টকের ‘মুভমেন্ট’ সামগ্রিক বাজারের তুলনায় কেমন, তা বুঝতে পারবেন। যেখানে বিটার ভ্যালু একের বেশি, সেই স্টক মার্কেটের তুলনায় বেশি ‘ভোলাটাইল’। সংক্ষেপে, বিটার নিরিখে ভোলাটিলিটির পরীক্ষা করতে পারেন। এখানেই ‘স্মার্ট বিটা’ প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়ায়। কয়েকটি অ্যাক্টিভ পদ্ধতির সঙ্গে প্যাসিভ ইনভেস্টিংয়ের কিছু সুবিধা, এই দুইয়ের মেলবন্ধন। রিস্ক ম্যানেজ করেও ডাইভারসিফিকেশনের সুযোগ নেওয়া যেতে পারে। রুল-বেসড বিনিয়োগ যাঁরা চান, তাঁদের এই স্ট্যাটেজির প্রয়োজন আছে আজকের পৃথিবীতে।
ভারতীয় বিনিয়োগকারী ইদানিং ‘স্মার্ট বিটা’ নিয়ে উৎসাহী হয়েছেন বুঝতে পারছি। প্যাসিভ ধরনের লগ্নির পন্থা তেমন আর নতুন কিছু নয়, বরং রুল-বেসড পদ্ধতিকে মর্যাদা দিতে শিখছি আমরা। কারণটা সহজেই বোধগম্য। সজাগ বিনিয়োগকারী বুঝতে পারছেন, সহজেই এর দ্বারা বড় রিটার্ন পাওয়া যাবে। বাছাই করা কিছু শর্তপূরণ হলে স্টক নির্বাচন করবেন ফান্ড কর্তৃপক্ষ, সেভাবেই লগ্নি করা হবে। আর রিটার্ন যে ভাল ভাবেই হচ্ছে তাও বোঝা যাচ্ছে। আমি এখানে বিশেষ করে ‘রিস্ক-অ্যাডজাস্টেড রিটার্ন’ নিয়ে বলছি।
ধরা যাক, কোনও ফান্ড আছে যেটি ভ্যালু-বেসড পদ্ধতি মেনে লগ্নি করে। স্টক বাছাই হয় প্রাইস-টু-আর্নিং, প্রাইস-টু-বুক ইত্যাদি শর্ত পূরণ হলে। কম দামী স্টক নিয়ে ভাল পারফর্ম্যান্স আনতে চান ফান্ড ম্যানেজার। এই ভাবে মোমেন্টাম-নির্ভর ফান্ড নিজের নিয়মে স্টক বেছে নেয়, রিটার্ন আনার প্রয়াস চালান তিনি। লো-ভোলাটিলিটি এবং হাই ডিভিডেন্ড ইল্ড–এই দুই শর্তও জরুরি এই প্রসঙ্গে।
[আরও পড়ুন: কংগ্রেস ছাড়লেন কৌস্তভ বাগচী, লোকসভার আগেই বিজেপিতে যোগ? নিজেই দিলেন ইঙ্গিত]
সুবিধা হল, খুব স্বচ্ছ ভাবে স্টক নির্বাচিত হয় রুল-বেসড পন্থা মেনে চললে। ডিসিপ্লিন্ড থাকেন ফান্ড ম্যানেজারও, তাতে আখেরে লাভ লগ্নিকারীরই। তবে বলে রাখি, রিস্ক থাকেই, যেমন সমস্ত ক্ষেত্রেই থাকে। রুল-বেসড মানে রিস্ক নেই, তা কিন্তু একেবারেই নয়। সব লগ্নির উদ্দেশ্যই হল, রিস্ক অতিক্রম করে ভাল রিটার্ন এনে দেওয়া। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নেই। ফান্ডের লগ্নিতে ‘হিউমান এরর’ খুব বড় ভূমিকা পালন করে। এখানে তা যাতে না হয়, সেজন্য সচেষ্ট থাকেন কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: ‘সন্দেশখালিতে ১৭৪ ধারা চলছে’, বেফাঁস মন্তব্যে নেটপাড়ায় ট্রোলড নুসরত জাহান]
‘স্মার্ট বিটা’ নিয়ে আমি বেশ আশাবাদী। ভারতীয় বাজারে এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল বলে মনে হয়, অন্তত প্রাথমিকভাবে বাজার তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। আমি বেশ বুঝতে পারছি, সাধারণ লগ্নিকারীদের জন্যও এখানে সুযোগ আছে। আগামিদিনে রুল-বেসড ইনভেস্টিংয়ের জন্য আরও বেশি অ্যালোকেশন করবেন বিনিয়োগকারীরা। ফান্ডের সংখ্যাও বাড়বে বলে মনে হয়। শেষ করার আগে কিন্তু বলে রাখি, অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে লগ্নি করবেন না। নিজের রিস্ক প্রোফাইল বুঝতে হবে সর্বাগ্রে। তারপর যদি এই ধরনের ফান্ড আপনার জন্য যথাযথ মনে হয়, তাহলেই সিদ্ধান্ত নেবেন।